কমিশনারের মেয়ে যখন আদরের বউ
২য় পার্ট)
……
(পরেরদিন)
ক্যামপাসে আমি আর রফি আসতেই দেখি। কমিশনারের মেয়ে যখন আদরের বউ 3 & end মীম কোনো এক ছেলের সাথে কথা বলছে। এটা দেখেই মাথায় রাগ উঠে বসে।
– রফি ব্যাগটা ধরতো.
– কেনো?
– মীমের দিকে তাকা।
– দোস্ত প্লীজ ঝামেলা করিস না। আমার কথা শোন..
আমি আর কিছু না বলেই সোজা মীমের কাছে চলে যায়…
– ঐ তোর নাম কি?
আমি ছেলেটার উদ্দেশ্যে কথাটি বলেছি। আমাকে দেখে সবাই দাঁড়িয়ে গেলো।
– ঐ বল তোর নাম কি? আর এখানে মীমের সাথে কি তোর? এর আগে দেখিনো তোকে কোনোদিন।
– কেন জানতে হবে উনি কে? (মীম)
– অবশ্যই জানতে হবে উনি কে। কারন, তুমি আমার জিএফ তো তার সাথে কোনো ছেলে কথা বলতে পারবে না আমি ছাড়া।
– ঐ কিসের জিএফ রে তোর আমি? (মীম)
– আমি তোমাকে ভালোবাসি তাই,,
কথাটি বলেই ছেলেটার কলার ধরে বললাম..
– ঐ বলিস না কেন কে তুই..?
– ঠাসসস ঠাসসস (মীম)
– আমাকে মারলে কেনো?
– ঐ তুই কোন সাহসে ওর জামার কলার ধরেছিস? আমি তোকে ভালোবাসি সেটা কখনও বলেছি আমি? নিজের মত আসছিস তুই। আসবিই তো,,কারন তোর মত কুত্তারা এসবই করে বেড়ায়।
কথাটি শুনে কলার ছেড়ে দিলাম। চড় মারাতে যতটা না কষ্ট হয়েছে তার থেকে কথাতে অনেক বেশি কষ্ট পেয়েছি। তখনি মাথাটা নিচু করে আমি চলে আসলাম রফির কাছে।
– দোস্ত মাথা গরম করিস না। (রফি)
– বাদ দে চল তোদের বাসায় যাবো। (আমি)
গেটে থেকে বের হতেই দেখি সেই লোকগুলো দাঁড়িয়ে আছে।
– কিরে হিরো,,আজ চড় তো খুব খেলি।
কথাশুনে অবাক হলাম। কারন, এরা সেটা কিভাবে জানে? কিন্তু চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলাম।
– আসলে তোদের মত কুত্তা মার্কা ছেলেরা এসবই পায় কপালে।
কথাটি শোনার সাথে সাথে চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে গেলো। সাথে রাগও বেড়ে গেলো।
তখনি কোমর থেকে ak47 পিস্তল বের করে যে বলেছিলো তার কপাল সোজা করে ধরলাম।
– বল কি বলছিলি? (আমি)
– না মানে ভাইয়া..
– এটা নে..
রফির দিকে তাকিয়ে দেখি একটা হকস্টীক। পিস্তলটা ওর হাতে দিয়ে বললাম, খবর দে সবাইকে আমি দেখছি। ওর হাত থেকে স্টীকটা কেড়ে নিয়ে ঐ লোকটার মাথা বরাবর দিলাম স্ব জরে বাড়ি।
তিনজন কে পিটাতে লাগলাম মনের খোরাক মত।
– ঠাসসসসস…ঠাসসসস…
তাকিয়ে দেখি মীম সামনে দাড়ানো। আর চড়টা আবারো ওর দেয়া।
– ছি..তুই এত জঘন্য আমি জানতাম না। আর এই লোকটা যাকে তুই কলার ধরেছিলি সে আমার বড় ভাই।
ঐখানে কিছু করিস নাই বলে এখানে এসে মাস্তানি করছিস…?
ঠিক তখনি রফিসহ দলের সবাই আমাকে ধরে নিয়ে চলে গেলো রফিদের বাসায়।
পরিস্থিত জানি সব ঠান্ডা করে দিবে আকাশ ভাই। তাই সেটা নিয়ে চিন্তা করলাম না। কিন্তু মীমের কথা খুব মনে পড়ছে। মেয়েটা খালি ভূলটাই বুঝলো। একবারো ভাবলো না এর মাঝে ভালোবাসা লুকিয়ে আছে।
আজ দুইদিন ধরে কলেজে যায়নি। কারন, আকাশ ভাই জানিয়েছিলো একটা খারাপ খবর। তাই সেভ জায়গাতে থাকতে হয়েছে। কিন্তু মীমকে খুব খুব মিস করাতে দুইদিন পর কলেজে আসলাম।
(কলেজে)
কলেজে এসে দেখি মীম শহীদ মিনারের উপর চুপচাপ একা বসে আছে। আমি আসতে আসতে ওর কাছে গেলাম।
– মীম..?
– আবার আপনি? লজ্বা হয়নি নাকি?
– একটা গল্প বলতে এসেছি।
– শুনতে চাই না।
– প্লীজ শোনো, গল্পটা বলার পর আমি আর কোনোদিন তোমার সামনে আসবো না।
– ওকে। কিন্তু মনে থাকে যেনো।
– একটা ছেলে ছিলো। বয়স ছিলো ১৪ বছর।
– তারপর..
– ছেলেটার মা তাকে আবির বলেই ডাকতো। অনেক সুখ ছিলো তাদের পরিবারে। মা,বাবা, আবির এই তিনজন মিলে ছিলো সুখী পরিবার।
– তারপর.
[ads2]
– আবিরের যখন ১৪ বছর বয়স হয়। তখন তার বাবা, রোজ রাতে মদ খেয়ে মাতাল অবস্থায় বাড়ি ফিরতো। তাদের সুখের সংসারটা কেমন তছনছ হয়ে যায়। নিমিষেই হারিয়ে যায় সুখ।
– এরপর..
– রোজ রাতে মাতাল হয়ে তার বাবা বাড়িতে আসতো এবং আবিরের মাকে খুব মারতো। সামান্য গেট খুলতে দেরি হলেও বেসম্ভব মারতো। আবির ছেলেটা খালি চেয়ে চেয়ে দেখতো। এমনি তরকারিতে যদি কোনো ত্রুটি থাকতো তখনি মারতো। একদিনো তিনি জিগাস করেনি আবিরের মা খেয়েছে কিনা। কিন্তু তিনি সেসব না করেই মারতো খালি।
– এরপর..
– এরপর, একদিন বিকেলে আবির আর ওর মা বাড়িতে বসে গল্প করছিলো। তখনি বাড়িতে কলিংবেল এর আওয়াজ পায়। দরজা খুলতেই দেখে।
আবিরের বাবা অন্য একটি মহিলাকে বাড়িতে বিয়ের শাড়ি পরিহিত অবস্থায় এনেছে। বুঝতে বাকি ছিলো না তিনি আবার বিয়ে করে এনেছে।
সেদিন আবিরের মা বলেছিলো ওর বাবাকে..
– আপনাকে আমি এত ভালোবাসি,, এতটা নির্যাতনের পরও চলে যায়নি। কি দোষ আমার? আমি তো আপনাকে নিঃশ্বার্থভাবে ভালোবেসেছি। এটাই কি তার প্রতিদান?
তখনি আবিরের বাবা আবিরের মাকে বলে.
– ঐ চুপ খান*** তোর মত বউকে আমি চাই না..ঠাসসসস
সেদিনই আবিরের মা আবিরের মাথায় হাত বুলিয়ে বলেছিলো..
“জীবনে কখনো নেশা করবি না। মানুষের পাশে দাঁড়াবি। কারন, নেশা মানুষকে ধ্বংস করে।
– তারপর..
– তারপর আবিরের মা সুইসাইড করে সেদিনি। আসলে ওর বাবার এই পরিবর্তন মেনে নিতে পারিনি। তাই তিনি সুইসাইড করেছিলো।
– তারপর..
– তারপর আবির বড় হতে থাকে সৎ মায়ের ঘরে। কিন্তু সেই সৎ মা কখনই সৎ হতে পারেনি। সে ছিলো একটা ডাইনি।
আর আবিরের বাবা তাকে কিছুই বলতো না। তার বউয়ের কথা শুনে আবিরকে আরো মারতো।
– তারপর..
– তারপর আবির আসতে আসতে বড় হতে থাকে। রফির সাথে বন্ধুত্ব হয় তার। কিন্তু আবির ঢিকে যায় একটি গ্যাং এ। সেই গ্যাংটা কোনো ক্রাইম গ্যাং না। হত দরিদ্রদের সাহায্য করার গ্যাং।
– হুমম,, তবে সেই আবিরটা কে??
তার দিকে চুপ করে তাকিয়ে থেকে বললাম,,
– সেই আবিরই হল আমি। আবির হাসান নিলয়।
– কিহহহহ?
– হুমমম
মীম তখনি দাঁড়িয়ে পড়লো,,তার চোখ দিয়ে কেমন যেনো একটা কষ্টের রেখা দেখলাম। বললাম..
– আমি তাহলে এখন যায়। গল্পটা শোনার জন্য ধন্যবাদ।
কথাটি বলেই সেখান থেকে চলে আসলাম। কলেজ থেকে বের হয়ে দেখলাম। একজন পুলিশ আমার দিকে তাকিয়ে আছে। তখনি জিপ থেকে দুইদিন আগে যাদেরকে পিটাইছিলাম তারাও পুলিশের পোষাক পরে বের হল। আমি তো দেখে অবাক।
( আদরের বউ )