কিশোরী বউ সকল পর্ব
কিশোরী বউ (সিজন ০২)
writer – কাব্য আহমেদ
#part_7
(শান্তি হলো এবার আপনাদের)
সামিরাঃ মেয়ে দেখলেই এমন গায়ে পড়তে মন বলে তাইনা? ঢপবাজ ছেলে নে এবার এই কাজটি করে দে কাজের মুড টাই নষ্ট করে দিলি
পূর্বঃ ok ok দেন আমি করে দিচ্ছি(ভয়ে কাছুমাছু হয়ে)
-সামিরার এখন অসম্ভব হাসি পাচ্ছে পূর্বর বোকামো দেখে এখনকার যুগেও যে এমন হাদারাম ছেলে পাওয়া যাই ভাবতেই সে আরও অবাক হচ্ছে
,
–চারিদিকে সকল অতিথিরা চলে এসেছে বিভিন্ন জনের মুখে বিভিন্ন কথা
কিন্ত অন্যদিকে কাব্যর এমন ব্যাবহার তিথি কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না খুব অসহ্য লাগছে তার
তিথিঃ একদম শরীর জ্বলে যাচ্ছে 😞খুব আনন্দ তাই না? আর ভালো লাগে না তাই সোজা কাব্যকে তার বন্ধুর মাঝে থেকে হাত ধরে নিয়ে চলে আসলাম ফাকা একটি জায়গাতে
কাব্যঃ কী হচ্ছেটা কী?? আমাকে এভাবে নিয়ে আসলে কেন??(বিরক্তিভাব নিয়ে)
তিথিঃ খুব মজা নিচ্ছ তাই না?? ভালো লাগছে এভাবে কষ্ট দিতে?(করুন গলাই)
কাব্যঃ আমি তো কাউকে কষ্ট দিই নি! উল্টে “আমাকেই কষ্ট দেওয়া হয়েছে তাই এখন নিজেকে গুছিয়ে নিচ্ছি::::::
তিথিঃ (খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরে) প্লিজ কাব্য আর পারছিনা মাফ করে দাও (কান্না করে দিয়ে) আর পারছি না এবার মাফ করো কথা দিচ্ছি আর এমন ভুল হবে না::::
কাব্যঃ ছাড় আমায় বন্ধুরা আমার জন্য অপেক্ষা করছে
তিথিঃ অপেক্ষা করবে কেন? তারা এখন অন্য গল্পে মগ্ন
কাব্যঃ ছাড়ো”””(স্বাভাবিক কন্ঠে)
তিথিঃ না ছাড়বো না প্লিজ সব ভুলে যাও(হুঁ হুঁ করে কান্না করে দিয়ে)
কাব্যঃ সরো আমার কাছে থেকে-তিথিকে ধাক্কা দিয়ে কোন দিক না তাকিয়ে চলে আসলাম কী করব বলো আমিও যে কষ্ট পেয়েছি খুব আর এখনো পাচ্ছি তুমিও কী কম কষ্ট দিয়েছ আমাই? খুব বেশি কষ্ট পেয়েছিলাম, কিন্ত তুমি চিন্তা করো না পিচ্চি বউ আমি তোমাকে সব কষ্ট আদর দিয়ে পুষিয়ে দেব আর কিছুক্ষন পরেই তুমি মন খুলে হাসবে কারণ তোমার জন্য আমি একটি সারপ্রাইজ রেখেছি
বন্ধুদের কাছে এসে আবার তাদের কথাই তাল মিলিয়ে কথা বলতে লাগলাম
কিন্ত একটু পরেই মা এসে ডাক দিল!!!!!!!!
মাঃ কাব্য এদিকে এসো!
কাব্যঃ কী হয়েছে মা??(মা এর কাছে এসে)
মাঃ বউমা কোথাই??
কাব্যঃ আমি কিভাবে বলব?? তুমিই দেখ হয়তো ওর কোন ফ্রেন্ড এর সাথে কথা বলছে….
মাঃ আমি ওতসব বুঝিনা অনেক সময় হয়ে গেছে অতিথিরাও চলে যাবে তাই অনুষ্ঠান শুরু করতে হবে তুমি বউমাকে নিয়ে এসো আর হ্যা চোখ দুটি বন্ধ করে নিয়ে আসবে একটি সারপ্রাইজ আছে,
কাব্যঃ আমি পারব না মা আমার এখন বন্ধুদের সাথে একটা important কথা চলছে,,
মাঃ আমার থেকেও ইম্পরট্যান্ট????
কাব্যঃ হ্যা তোমার থেকেও ইম্পরট্যান্ট (রাগে দুঃখে বললাম)
মাঃ বেশ থাক তোর বন্ধুদের নিয়ে আমিই খুজব আমার বউমাকে –★
কাব্যঃ আমি জানি মা তুমি দুঃখ পেয়েছ কারণ তুমি যখন দুঃখ পাও তখন আমাকে তুই বলো কী করব বলো আমি যদি এখন তিথির কাছে যাই তাহলে ওর সব মান অভিমান নিমিষেই পানি হয়ে যাবে–
:::::::::::::
মাকে দুঃখ দিয়ে আর ভালো লাগছে না তাই মন খারাপ করে একটি চেয়ার নিয়ে বসলাম :::চোখ বুঝে বসে আছি এমন সময় কেউ একজন অন্য সুরে আমাই ডাকছে খেয়াল করলাম::চোখ খুলে অবাক হয় কারণ সামিরা আমায় ডাকছে
সামিরাঃ ভাইয়া ভাইয়া(কাঁদোকাঁদো কন্ঠে)
কাব্যঃ আমি হতভম্ব হয়ে জিজ্ঞেস করলাম-কী হয়েছে??
সামিরাঃ ভাইয়া তিথি(এবার জোরেই কেদে দিল)
কাব্যঃ তিথি?? কী হয়েছে ওর? ও কোথাই??
সামিরাঃ ভাইয়া তিথি(খুব কান্না করে) তিথি senseless হয়ে পড়ে ছিল কিন্ত ওর মাথাই রক্তপাত হয়ে ছিল
কাব্যঃ what????????কী বলছ এসব??
সামিরাঃ আন্টি দ্রুত hospital নিয়ে চলে গেল
কাব্যঃ মাথাই যেন আকাশ ভেঙে পড়ল কী শুনছি এটা?. “” শরীরে একটুও শক্তি পাচ্চি না সব মনবল হারিয়ে ফেলছি::::::
সামিরাঃ বুঝতে পারছি ভাইয়ার এখন কী অবস্থা যা করার আমাকেই করতে হবে,,
::::
তাই আর দেরি না করে ভাইয়ার হাত ধরে জোর করে নিয়ে এসে গাড়িতে বসালাম আর ড্রাইভ আমি শুরু করলাম জানিনা ভাইয়াকে দিলে কেমন ভাবে চালাই★ অনেক আগে শিখেছিলাম দুঃখের মাথাই সব মনে না পড়লেও কন্ট্রোল করতে পারছি
কাব্যঃ সব আমার জন্য হয়েছে যখন ধাক্কা মেরেছিলাম কেন ওর দিকে ঘুরে তাকালাম না এর জন্য তারমানে আমিই দায়ী
–কাব্য শব্দ বিহীন কান্না করছে এতোটাই সে কষ্ট পাচ্ছে যে চোখ দিয়ে অঝোরে পানি পড়ছে কিন্ত সেটা প্রকাশ করতে পারছে না
সামিরাঃ পথ যেন শেষই হচ্ছে না তাও দ্রুত ড্রাইভ করে নিজ গন্তব্যে পৌছালাম
–ভাইয়া আমরা চলে এসেছি নামেন
কাব্যঃ নিজেকে খুব শক্ত করে দ্রুত ভিতরে প্রবেশ করলাম
সামিরাঃ ভাইয়া এট কী করছে উনি তো জানেন না যে তিথি কোন কেবিনে?? তাই আমিই জিজ্ঞেস করে ভাইয়াকে সাথে নিয়ে গেলাম
::::তিথির কেবিনের কাছে যেয়ে দেখি -পূর্ব,আন্টি আর কিছু পরিচিত লোক দাঁড়িয়ে কান্না করছে
কাব্যঃ নিজেকে আজ খুব বড় অপরাধী লাগছে কী করে পারলাম এটি করতে? কিছু ভেবে না পেয়ে মার সামনে গেলাম—মা আমার তিথি????(কান্না করে)
মাঃ ঠাসসসসসসসসসসস…… তোকে আমি এই শিক্ষা দিয়েছি???? কী করেছিস মেয়েটার সাথে? আজ যদি ওর কিছু হয়ে যাই আমি তোকে কোনদিন ক্ষমা করব না
–কাব্যকে তার মা জোরে একটা চড় বসিয়ে দেই কিন্ত কাব্য তার কোন প্রতিবাদ না করে উল্টো তার মাকে জড়িয়ে ধরে দুজনে মিলেই কান্না করতে লেগে যাই
কাব্যঃ আমাকে আরও মারও মা আরো মারও তোমার ছেলে অনেক খারাপ অনেক কেন এটা সে করল (কান্না করে)
–কিছুক্ষন পর কেবিন থেকে ডক্টর বের হলো ****
কাব্যঃ ডক্টর ও এখন কেমন আছে??
ডক্টরঃ আপনি কী উনার husband??
কাব্যঃ হ্যা!!
ডক্টরঃ প্রেসেন্ট এর অবস্থা খুবইই খারাপ মনে হয় অতিরিক্ত টেনশন করেছে যার জন্য অনেক চাপ গেছে উনার উপর দিয়ে। কেমন করে খেয়াল রাখেন উনার??
কাব্যঃ জানিনা কিন্ত আজ থেকে অনেক খেয়াল রাখব আর ভুল হবে না
:;;
আমি কী ভিতরে যেতে পারি এখন??
ডক্টরঃ হ্যা আপনি উনার husband এখন উনার পাশে আপনাকে প্রয়োজন আপনি শুধু মাত্র যেতে পারেন,আর হ্যা কোন রকম কান্না বা শব্দ করবেন না তাহলে উনার আরো চাপ বেড়ে যাবে ঘুমের ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছে সকালি জ্ঞান ফিরবে
কাব্যঃ আচ্ছা ডক্টর ধন্যবাদ
–ডক্টর চলে গেলেন
কাব্যঃ মা তুমি এমনিতেই অসুস্থ তুমি এদের সবাইকে নিয়ে বাসাই ফিরে যাও আর দেখ কাল তোমার ছেলে তোমার বউমাকে হাসিমুখে বাসাই নিয়ে আসবে।
মাঃ কিন্ত তোকে এভাবে রেখে কী করে যাই??
কাব্যঃ তুমি চিন্তা করো না শুনলে না ডক্টর কী বল্ল আমি একটুও কান্না করতে পারব না
মাঃ আচ্ছা ঠিক আছে
–কাব্যর মা সবাইকে নিয়ে বাসাই চলে গেল আর এদিকে কাব্য কেবিনের বাইরে একা দাঁড়িয়ে
অঝোর ধারাই তার দুটি চোখ দিয়ে পানি পড়ছে সে সামনের দিকে এগিয়ে চলেছে কিন্ত কেউ যেন তাকে ঝাপটে ধরে আছে যার কারনে ও যেতে পারছে না
কাব্যঃ খুব জোর করেই তিথির কাছে আসলাম যেন পা তুলতে পারছি না
তিথির কাছে এসে দুই গালে হাত দিয়ে খেয়াল করলাম বউটা নিজের কী অবস্থা করেছে কান্না করে চোখমুখ ফুলিয়ে ফেলেছে একটু নিচু হয়ে কপালে একটি ভালবাসার পরস একে দিলাম
তারপর পাশের চেয়ারে বসে তিথির বুকে মাথা দিলাম কিন্ত তিথির এই চুপ থাকা দেখে আবারও কান্না বেড়ে গেল
:::::;:
বিশ্বাস করো তোমার বর তোমাকে আর কখনো কষ্ট দেবে না এবার থেকে খুব আদর করবে কিন্ত তুমি এমন কেন করো আমার সাথে জানোনা আমি খুব কষ্ট পাই? কিন্ত তুমি আমাকে শাসন না করে আরও অভিমান করো কেন? আমাকে শাসন করবে বকবে মারবে তুমিইতো আমার সব আমার সাথে যা ইচ্ছা করবে
–আরও অনেক কথা বলতে বলতে কাব্য ঘুমিয়ে পড়ল এতোটা কান্না করেছে যে আর চাপ সহ্য করতে পারছে না
চলবে,,,,,,,,,
।