ম্যাডাম যখন বউ সকল পর্ব
#গল্পঃম্যাডামযখনবউ
#পর্বঃ১০
খেয়াল করলাম ওর সামনের চুল গুলো ওর মুখে এসে পড়ছে। নিজের অজান্তে “ফু” দিয়ে সেই চুল গুলে সরিয়ে দিলাম। ফু দিয়ার সাথে সাথে ও আমাকে আরও শক্ত করে জরিয়ে ধরলো।তারপর আমিও আর কিছু না ভেবে ভালোবেসে নুসরাত কে জরিয়ে ধরলাম। অন্য কাউকে তো জরিয়ে ধরিনি। আমি আমার ভালোবাসার মানুষ আমার ম্যাডাম বউকে জরিয়ে ধরেছি। পরে যা হবে দেখা যাবে এখন ওকে জরিয়ে ধরে ঘুমিয়ে থাকি।(৯ম পর্বের পর থেকে)
=নুসরাতঃ পাগলটা দেখি ঘুমের মধ্যে আমাকে জরিয়ে ধরেই ঘুমিয়ে আছে। ইসস্ ওকে ছেড়ে যেতে মন চাচ্ছে না।মন চাচ্ছে এভাবেই ওর বুকের উপর শুয়ে থাকি।কিন্তু এদিকে যে সকাল হয়ে গেছে। এখন তো উঠতে হবে।যায় আমি বরং ওর জন্য চা নিয়ে আসি।(মনে মনে)
=আমিঃ কোথায় যাচ্ছ আমাকে রেখে। (ঘুমের মধ্যে)
=নুসরাতঃ ওহ্হ ঘুমের মধ্যে কথা বলছে।আমিতো আবার অন্য কিছু ভাবছিলাম। পাগল একটা।
এই কথা বলে চা আনতে চলে গেলো।একটু পর চা নিয়ে আসলো,,,,,
=নুসরাতঃ কি ব্যাপার ও ঘুমের মধ্যে এভাবে মিট মিট করে হাসছে কেন।নিশ্চয়ই শয়তান টা অন্য কোন মেয়ে কে নিয়ে স্বপ্ন দেখছে। এমন যদি হয় তাহলে ওকে আজ সত্যিই মেরে ফেলবো। আমাকে ছাড়া অন্য কোন মেয়েকে নিয়ে স্বপ্ন দেখা বের করছি দারা।(রাগী ভাবে)
এই কথা বলে গরম চায়ের কাপের ভেতর আমার আঙুল ডুবিয়ে দিলো,,,,,,
=আমিঃ আআআআআআআআহহহ । (জরে চিৎকার করে উঠলাম)
এক লাফ দিয়ে ঘুম থেকে উঠে আঙুল মুখের মধ্যে দিয়ে আশে-পাশে দেখতে লাগলাম। আমার এমন কান্ড দেখে নুসরাত হাসতে লাগলো। ওকে এমন ভাবে হাসতে দেখে আমি আমার আঙুলের ব্যাথা ভুলে গিয়ে ওর ঐ হাসির দিকে এক পলকে চেয়ে আছি। বাহ্ নুসরাত হাসলে যে এত সুন্দর লাগে আগে জানতাম না। কিন্তু হঠাৎ করে ও হাসি থামিয়ে দিয়ে আমার দিকে রাগি ভাবে তাকালো। হঠাৎ আমার দিকে এভাবে তাকাতে দেখে আমি ভয় পেয়ে গেলাম। কি ব্যপার ও আমার দিকে এমন ভাবে তাকিয়ে আছে কেন।
এর পর ওকে দেখলাম চায়ের কাপটা টেবিলের উপর রেখে আমার দিকে এগিয়ে আসতে লাগলো। আমিও ভয় পেয়ে খাটের এক কোনায় চলে গেলাম।
=আমিঃ কি ব্যপার ম্যাডাম আপনি আমার দিকে এভাবে এগিয়ে আসলেন কেন।
=নুসরাতঃ,,,,,,,,,।(কিছু না বলে চুপ করে আমার দিকে রাগি ভাবে তাকিয়ে আছে।)
=আমিঃ ঐ আপনি একদম আমার দিকে ওভাবে তাকাবেন।
=নুসরাতঃ তাহলে তোমার দিকে কি দৃষ্টিতে তাকাবো।(ভ্রু ভাচ করে)
=আমিঃ কেন ভালোবাসার দৃষ্টিতে। (অস্পষ্ট ভাবে)
=নুসরাতঃ ঐ কি বললেন।(রাগী ভাবে)
=আমিঃ নাহ্ কিছু না।
=নুসরাতঃ তাহলে আমার কাছে এমন মনে হলো কেন যে আপনি আস্তে করে কি যেন বললেন।
=আমিঃ আরে বাবা সত্যি আমি কিছু বলিনি।
=নুসরাতঃ আচ্ছা ঠীক আছে মানলাম আপনি কিছু বলেননি। তাহলে এবার আমাকে একটা কথা বলুন তো।
=আমিঃ কি?
=নুসরাতঃ ঘুমের মধ্যে আপনি কোন মেয়েকে স্বপ্ন দেখে মিটমিট করে হাসছেন।
=আমিঃ কিহ্।(অবাক হয়ে)
=নুসরাতঃ এভাবে হা করে আমার দিকে তাকিয়ে না থেকে তাড়াতাড়ি বলে ফেলেন।
=আমিঃ আরে কি বলেন আমি কেন হাসতে যাবো। আমিতো হাসি নাই।
=নুসরাতঃ ঐ একদম মিথ্যা বলার চেষ্টা করবেন না। আমি দেখছি আপনি ঘুমের মধ্যে হাসছিলেন।
=আমিঃ আরে ঘুমের মধ্যে কেন হাসছিলাম তা আমি কি করে বলবো।আর সত্যি কথা বলছি আমি কোন মেয়েকে নিয়ে স্বপ্ন দেখি নাই।
=নুসরাতঃ সত্যি তো।(অভিমানী সুরে)
=আমিঃ হ্যা ম্যাডাম সত্যি।
=নুসরাতঃ তাহলে সব ঠীক আছে।
এই কথা বলে আমার দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিয়ে চায়ের কাপটা নিয়ে চলে গেলো। কি ব্যপার ওর শেষের কথাটা বলার মানে কি। তাহলে কি নুসরাত ও আমাকে ভালোবাসতে শুরু করছে। যদি এমনটা না হবে তাহলে ও কেন অন্য কোন মেয়ের কথা বলে এভাবে রেগে গেলো। আমি শিওর ও আমাকে ভালোবাসে। তার পর ও আমাকে আর একটু শিওর হতে হবে। এসব কথা ভাবছি এমন সময় নুসরাত এসে আমাকে বলে,,,,,,,,
=নুসরাতঃ এই নিন ধরুন।(চায়ের কাপ এগিয়ে দিয়ে)
=আমিঃ যদিও আমি চা খাইনা তারপর ও আপনি যখন কষ্ট করে আনছেন তাহলে খেতেই হয়।
=নুসরাতঃ না খেলে জর করে খাওয়া লাগবে না দিন।( একটু রাগ দেখিয়ে)
=আমিঃ আরে মজা করছিলাম।( চা-তে চুমুক দিয়ে)
=নুসরাতঃ,,,,,,,,,।(চুপ)
=আমিঃ বাহ্ আপনাদের বাসার কাজের লোকটা তো খুব ভালো চা বানাতে পারে।
=নুসরাতঃ কাজের লোক চা বানাইনি।
=আমিঃ তাহলে কি আংকেল বানিয়েছে।(একটা মুচকি হাসি দিয়ে)
=নুসরাতঃউফফ!! বাবা কেন চা বানাতে যাবে।
=আমিঃ তাহলে কে বানিয়েছে।(অবাক হয়ে)
=নুসরাতঃ কেন আমি বানাতে পারিনা নাকি।
=আমিঃ কিহ্ আপনি এতো সুন্দর করে চা বানতে পারেন।(অবাক হয়ে)
=নুসরাতঃ হ্যা আমিই বানিয়েছি মি.।
=আমিঃ সত্যি আপনি যেমন সুন্দর। তেমনি আপনার হাতের চা ও তেমন ভালো হয়ছে।
=নুসরাতঃ আচ্ছা চা খাওয়া শেষ হলে ফ্রেশ হয়ে নিচে আসবেন নাস্তা করার জন্য।
দেখলাম নুসরাত লজ্জা পেয়ে আমার সামনে থেকে দৌড় দিয়ে চলে গেলো। পাগল একটা মেয়ে। তারপর আমি ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করতে চলে গেলাম। নাস্তা করছি এমন সময় নুসরাত বলে,,,,,,,
=নুসরাতঃ বাবা আমরা আজই চলে যাবো।
=আংকেলঃ কেনরে মা আর ২দিন থেকে গেলেই তো পারতি।
=নুসরাতঃ নাহ্ বাবা আবার আসবানি।আর কাল থেকে অফিসে ও যেতে হবে।
=আংকেলঃ তুই অফিসে যাবি।
=আমিঃ তাতে সমস্যা কি আংকেল। ও বিয়ের আগে যেমন ছিলো এখনও তেমনই থাকবে।
=আংকেলঃ মারে তুই না গেলেও আমি একা সামলে নিতে পারতাম। আর তাছাড়া আমার কোন সমস্যা হলে রাজ তো আছেই।
=আমিঃ আংকেল ওকে আর মানা করবেন না।
=আংকেলঃ ঠীক আছে বাবা।
তারপর নাস্তা শেষ করে রুমে এসে আমি তৈরি হতে লাগলাম।
=নুসরাতঃ আপনি বাইরে যান তো।
=আমিঃ কেন।
=নুসরাতঃ আমি কাপড় চেঞ্জ করবো তাই।
=আমিঃ আমার সামনে করলে সমস্যা কি।আমিতো আর পর কেউনা।(মনে মনে),
=নুসরাতঃ কিহ্ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কি ভাবছেন।
=আমিঃ কৈ কিছু ভাবছি নাতো।
=নুসরাতঃ তাহলে এমন হাবার মত দাঁড়িয়ে না থেকে বাইরে যান।
তারপর আমি নিচে এসে আংকেলের সাথে কথা বলতে লাগলাম। একটু পর নুসরাত ও চলে আসলো তৈরি হয়ে। তারপর আংকেলের কাজ থেকে বিদায় নিয়ে আমাদের বাসার উদ্দেশ্য রওহলাম।আমার একটা বিষয় মাথায় আসছে না যে এখানে আসার আগে নুসরাত আমার মাকে জরিয়ে ধরে যেমন কান্না করছিলো। কিন্তু যাওয়ার সময় ওকে দেখে মনে হচ্ছে ও ভিশন খুশি। মনে হয় নিজের বাড়ি ফিরে যাচ্ছে তাই এত খুশি লাগছে ওকে।
তার পর বাসায় পৌঁছে গেলাম।
=মাঃ আরে বউমা তোমরা চলে এসেছো।
=নুসরাতঃ কি করবো মা আপনাদের ছাড়া ওখানে থাকতে ভালো লাগছেনা।
=মাঃ ভালো করছো মা। তোমাকে ছাড়াও বাসাটা কেমন জানি ফাঁকা ফাঁকা লাগছিলো।
=আমিঃ ছেলের বউ হয়ছে ১ দিন ছিলোনা বাসায় তারপর ও ২ দিন পর মা বলে বাসা ফাঁকা লাগে। বলি কি তোমার ছেলের দিকেও তো একটু তাকাও।
=মাঃ তোর দিকে কেন তাকাবো না বাবা তুই তো আমার সোনা ছেলে।
=আমিঃ হুমম তুমি তোম ঐ বউমা কেই ভালোবাসো। আমি রুমে গেলাম।
=নুসরাতঃ দেখলেন মা আমাদের মা ও মেয়র ভালোবাসায় কেমন নজর দিচ্ছে।
=মাঃ পাগল ছেলে একটা। যাও মা তুমিও রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নাও।
তারপর আমি রুমে চলে আসি নুসরাত ও আমার পেছন পেছন আসলো। রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে রাতের খাওয়া দাওয়া শেষ করে আজ তাড়াতাড়ি ঘুমাতে গেলাম কারণ কাল থেকে নাকি অফিসে যেতে হবে।
=আমিঃ বলছিলাম কি এ কয়দিন তো আপনাদের বাসায় ছিলাম তাই আপনি খাটে শুতে দিছেন। তাহলে আজ কি আবার সোফায় ঘুমাতে হবে।
=নুসরাতঃ ঐ আপনি এত বেশি বুঝেন কেন হ্যা।আমি কি বলছি আপনাকে সোফায় ঘুমানোর কথা।
=আমিঃ না তা ঠীক বলেননি তারপর ও আমি মনে করছিলাম।
=নুসরাতঃ মনে করা বাদ দিয়ে এখন চুপচাপ খাটে শুয়ে পড়েন। আর সকালে অফিস আছে বুঝলেন। দেরি হলে কিন্তু আবার।
আমি আর কোন কথা না বলে চুপচাপ শুয়ে পড়লাম। সকালে ঘুমিয়ে আছি তখনই,,,,,,,,,,
বিঃদ্রঃ বন্ধুরা পরীক্ষা শুরু হয়ে গেছে তাই গল্প দিতে একটু দেরি হতে পারে। তাই দয়া করে কেউ কিছু মনে করবেন না। আর আমার জন্য দোয়া করবেন যেন পরীক্ষাটা ভালো হয়।
To be Continue ⏩
(চলবে……….)
Writer by স্বপ্নহীন_বালক
বন্ধুরা হয়তো অন্য সবার মত গল্পের কথা গুলো গুছিয়ে লিখতে পারিনা। তার-পর লিখার চিষ্টা করি। তাই গল্পটাই Next না লিখে ভালো বা খারাপ যেটাই আপনাদের কাছে মনে হয় সেটা জানাবেন। ধন্যবাদ।
( পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষা করুন।)