ম্যাডাম যখন বউ সকল পর্ব
#গল্পঃম্যাডামযখনবউ
#পর্বঃ১১
=আমিঃ বলছিলাম কি এ কয়দিন তো আপনাদের বাসায় ছিলাম তাই আপনি খাটে শুতে দিছেন। তাহলে আজ কি আবার সোফায় ঘুমাতে হবে।
=নুসরাতঃ ঐ আপনি এত বেশি বুঝেন কেন হ্যা।আমি কি বলছি আপনাকে সোফায় ঘুমানোর কথা।
=আমিঃ না তা ঠীক বলেননি তারপর ও আমি মনে করছিলাম।
=নুসরাতঃ মনে করা বাদ দিয়ে এখন চুপচাপ খাটে শুয়ে পড়েন। আর সকালে অফিস আছে বুঝলেন। দেরি হলে কিন্তু আবার।
আমি আর কোন কথা না বলে চুপচাপ শুয়ে পড়লাম। সকালে ঘুমিয়ে আছি তখনই,,,,,,,(১০ম পর্বের পর থেকে)
কে যেন আমার মুখে পানি ঢেলে দিলো। চোখ খুলে দেখি নুসরাত হাতে মগ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে,,,,,,,,,,
=আমিঃ এটা কি হলো।(রাগি ভাবে)
=নুসরাতঃ কেন বুঝতে পারেননি। দাড়ান আর এক মগ পানি এনে বুঝিয়ে দিচ্ছি।
=আমিঃ আমার মুখে এভাবে পানি দিলেন কেন।
=নুসরাতঃ সেই কখন থেকে ডাকছি। কিন্তু আপনার তো কোন হুঁশই নেই।তাই বাধ্য হয়ে এই কাজ করতে হলো।
=আমিঃ তাই বলে ভিজিয়ে দিতে হবে।(কাশতে কাশতে)
=নুসরাতঃ যদিও এখনও না উঠেন তাহলে আবার ভিজিয়ে দেব।
=আমিঃ এই না না। আমি এই যে উঠে গেছি।
=নুসরাতঃ হুমম গুড।এখন যান ফ্রেশ হয়ে নিন।
এই কথা বলে নুসরাত চলে গেলো। আর আমিও ফ্রেশ হতে চলে গেলাম। কি মেয়েরে বাবা। স্বামীর অধিকার দেবে না অথচ স্ত্রীর অধিকার ঠীকই দেখাচ্ছে। এই মেয়ের মন বুঝা খুবই কঠিন। ধূর ভাল্লাগে না এত সকালে ঘুম থেকে উঠতে। তারপর ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করতে গেলাম,,,,,,,,
=আমিঃ মা তাড়াতাড়ি নাস্তা দাও।(চিৎকার করে)
=মাঃ,,,,,,,,,,,।(কোন কথা না বলে আমার দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে)
=আমিঃ তোমার আবার কি হলো।এভাবে আমার দিকে তাকিয়ে আছো কেন।
=মাঃ ওগো দেখে যাও।(বাবাকে উদ্দেশ্য করে)
=বাবাঃ কি হয়েছে।
=মাঃ দেখো তোমার ছেলের যেন কি হয়ছে।
=আমিঃ আরে আশ্চর্য আমার আবার কি হবে।
=বাবাঃ তোর শরীর ভালো আছে তো।
=আমিঃ তোমরা কি বলছো আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না।
=মাঃ তুই এত সকালে উঠলি যে। তোকে তো কোন দিনও এত সকালে উঠতে দেখি নাই আজ হঠাৎ কি মনে করে উঠলি।
=আমিঃ কি করবো তাড়াতাড়ি তো আর সাধে উঠি নাই। এক মগ পানি মুখের উপর ছুরে মারলে যে কেউ ঘুম থেকে উঠে যাবে।
=নুসরাতঃ এখন থেকে প্রতিদিনই এমন তাড়াতাড়ি উঠবে।তা না হলে আবার ভিজিয়ে দেবো।(রান্না ঘর থেকে বের হতে হতে)
=বাবাঃ তার মানে তোর তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠার পেছনে বউমার হাত আছে।
=মাঃ ভালো করছো মা। এর পর থেকে দেরি করে উঠলে মগের জায়গায় বালতি নেবে।
=আমিঃ হুমম যত খুশি বলো। একদিন সমায় আমার ও আসবে।
এই কথা বলে নাস্তা করতে লাগলাম। তারপর নাস্তা শেষ করে সোজা রুমে চলে আসলাম। অফিসে যাওয়ার জন্য তৈরি হতে লাগলাম। ধূর আমার দ্বারা এই টাই বান্দা সম্ভব না। তাই অন্য সব দিনের মত আজও মাকে ডাক দিলাম,,,,,,
=আমিঃ মা ও মা কথায় গেলে।(জরে চিৎকার করে)
=নুসরাতঃ কি ব্যাপার সকাল বেলে বাচ্চাদের মত মাকে ডাকছেন কেন।
=আমিঃ মাকে ডাকছি একটা দরকারে।
=নুসরাতঃ কি দরকার আমাকে বলুন। আর টাই নিয়ে এভাবে দাড়িয়ে আছেন কেন।
=আমিঃ কারণ আমি টাই পড়তে পারিনা। এই জন্যেই তো মাকে ডাকছি।
=নুসরাতঃ তাহলে এত দিন কি মা আপনাকে টাই পড়িয়ে দিতো।
=আমিঃ হ্যা।
=নুসরাতঃ হাহাহোহো। এই সহজ কাজটা পারেনা। দিন আমি পড়িয়ে দিচ্ছি।
=আমিঃ না থাক আপনি কেন শুধু শুধু কষ্ট করতে যাবেন।তার থেকে বরং আমি যাওয়ার সময় মায়ের কাছ থেকে পড়ে যাবে।
=নুসরাতঃ ঐ টাই পড়িয়ে দিতে কষ্ট হয় আপনাকে কে বলছে। আমিতো আমার বাবাকে রোজ পড়িয়ে দিতাম।
তারপর আমাকে আর কোন কথা বলতে না দিয়ে আমার হাত থেকে টাই টা নিয়ে পড়িয়ে দিতে লাগলেন। আমিও আর কোন বাধা দিলাম না।
=নুসরাতঃ এই যে একটু নিচু হন তো।
=আমিঃ ঐ মেরে ফেলবেন নাকি। এত টাইট করে কেউ বাঁধে।
=নুসরাতঃ এবার ঠীক আছে।
=আমিঃ হুমম এবার ঠীক আছে।
=নুসরাতঃ আর শুনুন কাল থেকে টাই পড়িয়ে দেওয়ার জন্য মাকে ডাকবেন না বুঝলেন।
=আমিঃ তাহলে কে পড়িয়ে দেবে।
=নুসরাতঃ কে আবার আমি।
=আমিঃ তা কোন অধিকারে আপনি আমার টাই পড়িয়ে দেবেন।(দুষ্টুমি হাসি দিয়ে)
=নুসরাতঃ কেন ইস।( এটুকু বলে থেমে গেলো)
=আমিঃ কি হলো বলুন।
=নুসরাতঃ,,,,,,,,,,,।(চুপ)
=আমিঃ আপনি যেহেতু আমাকে স্বামীর হিসেবে মানেন না ।তাহলে খামাখা আপনি কেন আমাকে রোজ টাই পড়িয়ে দেবেন। এর থেকে ভালো হয় আপনি আপনার মত থাকবেন আর আমি আমার মত।
এই কথা বলে রুম থেকে বেরিয়ে গেলাম। বের হওয়ার আগে নুসরাতের দিকে একবার পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখি ও কেমন করুন দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে ছিলো। কি করবো এভাবে আর কত দিন থাকা যাবে৷ দুজনের ভেতর শুধু নামেই স্বামী-স্ত্রী। এভাবে তো আর বেশিদিন চলতে দেওয়া যাবেনা। তাই এখন থেকে ওকে একটু অবহেলা করে চলবো। আমিও দেখবো তুমি আমাকে স্বামীর অধিকার না দিয়ে কথায় যাও।
এসব কথা ভাবতে ভাবতে অফিসে পৌঁছে গেলাম। অফিসে এসে আমি আমার কেবিনে বসতেই আমার এক কলিগ এসে বলে,,,,,,
=কলিগঃ আরে রাজ সাহেব। এত দিন কোথায় ছিলেন।
=আমিঃ একটু অসুস্থ ছিলাম। এই জন্য অফিসে আসতে পারিনি। (মিথ্যা বললাম)
=কলিগঃ অবশ্য একদিক থেকে ভালোই করছেন না এসে।
=আমিঃ কেন।
=কলিগঃ আরে আপনি যে কয়দিন আসেন নাই সে কয়দিন তো ম্যাডাম ও অফিসে আসেনি।
=আমিঃ ও তার মানে অফিসের কেউ আমার আর নুসরাতের যে বিয়ে হয়ছে এটা জানেনা।(মনেমনে)
=কলিগঃ মনে মনে কি ভাবছেন।
=আমিঃ এটাই ভাবছিলাম যে ম্যাডাম কেন এতদিন আসেনি।
=কলিগঃ আমি অবশ্য একটা কতা শুনছি তবে শিওর না।
=আমিঃ কি কথা বলেন তো।
=কলিগঃ শুনছি ম্যাডামের নাকি বিয়ে হয়ে গেছে।
=আমিঃ বলেন কি। ম্যাডামের বিয়ে হয়ছে।আর অফিসের কেউ জানেন না।
=কলিগঃ আপনাকে তো আগেই বলছি যে ম্যাডাম যে বিয়ে করছে নাকি এটা শিওর না।
আমিঃ হুমম বুঝতে পারছি।
=কলিগঃ আরে ঐ তো ম্যাডাম আসছে। আপনি কাজ করুন তাহলে আমি যায়।
এই কথা বলে সে চলে গেলো। তার কথা শুনে আমার খুব হাসি আসছে। কারণ নুসরাত আর আমার বিয়েটা এমন ভাবে হয়ছে যে অফিসের কেউই জানেনা। শুধু জানে ম্যাডামের বিয়ে হয়ছে কিন্তু কার সাথে হয়ছে এটা জানেনা।হাহাহাহা। যদি সবাই জানতে পারে যে ম্যাডামের বিয়ে আর কারো সাথে নয় আমার সাথে হয়ছে তখন যে তাদের রিয়াকশন কেমন হবে এটা ভেবেই যেন হাসি টা আটকে রাখতে পারছিনদ। না বাবা অনেক হাসাহাসি হলো এখন কাজে মন দিতে হবে। তারপর আমি আমার জমে থাকা কাজটা করতে লাগলাম। একটু পর অফিসের ফোনে কল আসলো।আমি রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে,,,,,,,,,,,
=আমিঃ হ্যালো কে বলছেন।
=নুসরাতঃ আপনি একটু আমার কেবিনে আসুন।
এই কথা বলে কলটা কেটে দিলো। কে জানে আবার কি জন্য ডাকছে। যায় দেখে শুনে আসি। তারপর নুসরাতের কেবিনের সামনে গিয়ে,,,,,,,,,
=আমিঃ ম্যাডাম আসবো।
=নুসরাতঃ হুমম আসুন।
তার ভেতরে গিয়ে নুসরাতের দিকে তাকিয়ে দেখি ও অফিসে শাড়ি পড়েই এসেছে।বাহ্ ও যে অফিসে ও শাড়ি পড়ে আসবে ভাবতে পারিনি । আমিতো নুসরাতের দিকে এক পলকে চেয়ে আছি।
=নুসরাতঃ হ্যালো মি.। হা করে তাকিয়ে না থেকে বসুন।
=আমিঃ বলুন কি জন্য ডাকছেন।( একটু লজ্জা পেয়ে)
=নুসরাতঃ এ হচ্ছে অধরা। আজ থেকে ও আপনার সহকারী।
=আমিঃ আরে আমার পাশে যে একটা মেয়ে বসে আছে আমিতো খেয়ালই করিনি।(মনে মনে)
=অধরাঃ হ্যালো স্যার।(আমার দিকে হাত বাড়িয়ে দিলো হ্যান্ডশিপ করার জন্য)
=আমিঃ হাই।(বলে হাত বাড়িয়ে দিলাম)
=নুসরাতঃ আপনাদের হাত মেলানো শেষ হলে কাজের কথায় আসা যাক।(এলটু রাগ দেখিয়ে)
=আমিঃ ওহ্ সরি।বলুন ম্যাডাম।
=নুসরাতঃ মিস অধরা আজ থেকে আপনি রাজের কাজে সাহায্য করবেন।
=অধরাঃ ঠীক আছে ম্যাম।
=নুসরাতঃ এখন আপনারা আসতে পারেন।
=আমিঃ অধরা আপনি আমার সাথে আসুন।
এই কথা বলে ম্যাডাম এর কেবিন থেকে বের হয়ে আমার কেবিনের দিকে যেতে লাগলাম। তারপর আমার কেবিনে এসে অধরা কে কাজ বুঝিয়ে দিতে লাগলাম,,,
=আমিহ দেখুন কাজে কোন সমস্যা হলে বিনা কোন সংকোচ বোধ না করে আমাকে বলবেন।
=অধরাঃ ওকে স্যার।
আমি অধরার সাথে কথা বলছিলাম এমন সময় মনে হলো দরজার বাইরে দাড়িয়ে কেউ আমাদের কথা শুনছে। আমার আর বুঝতে বাকি রইল না যে এটা নুসরাত ছাড়া আর কেউ না। তাই আমিও নুসরাত কে শুনিয়ে শুনিয়ে জরে কথা বলতে শুরু করলাম,,,,,,,
=আমিঃ আরে স্যার নয় তুমি চাইলে আমার নাম ধরে ডাকতে পারো। আর আমিও তোমাকে নাম ধরেই ডাকবো।
=নুসরাতঃ আচ্ছা ঠীক আছে স্যার। উফ্ফ সরি রাজ।
=আমিঃ হুমম এবার ঠীক আছে তুমি এবার তোমার কাজ করো গিয়ে। আর কোন সমস্যা হলে আমার কাছে চলে এসো।
তারপর অধরা দরজা খুলে যেই বের হলো ঠীক তখনই দেখলো,,,,,,,,,,,,,,,
বিঃদ্রঃ বন্ধুরা পরীক্ষা শুরু হয়ে গেছে তাই গল্প দিতে একটু দেরি হতে পারে। তাই দয়া করে কেউ কিছু মনে করবেন না। আর আমার জন্য দোয়া করবেন যেন পরীক্ষাটা ভালো হয়।
To be Continue ⏩
(চলবে……….)
Writer by স্বপ্নহীন_বালক
বন্ধুরা হয়তো অন্য সবার মত গল্পের কথা গুলো গুছিয়ে লিখতে পারিনা। তার-পর লিখার চিষ্টা করি। তাই গল্পটাই Next না লিখে ভালো বা খারাপ যেটাই আপনাদের কাছে মনে হয় সেটা জানাবেন। ধন্যবাদ।
( পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষা করুন।)