#গল্পঃ ম্যাডামযখনবউ
#পর্বঃ০১
শীতের সাকলে খুব আনন্দে ঘুমিয়ে আছি এমন সময় মায়ের ডাকে ঘুম থেকে উঠি,,,,,
মাঃ এই রাজ উঠ বাবা আর কত ঘুমাবি।
=আমিঃ উফফ!! আর একটু ঘুমাতে দাও।
=মাঃ আজ না তোর ইন্টারভিউ আছে উঠে পর বাবা।
=আমিঃ হুমম কত বাজে।(ঘুম ঘুম চোখে)
=মাঃ ৮ বাজে।
=আমিঃ কিহ্ ৮ বেজে গেছে।(এক ফাল দিয়ে দাঁড়িয়ে ঘড়ির দিকে তাকালাম)
=মাঃ হ্যা তাহলে তোকে আর বলছি কি।
আমিঃ ইসস!! মা তুমি আমাকে আর একটু আগে ডাকলে না কেন। এখন আমি ৯ টার ভেতর অফিসে পৌছাবো কেমন করে।
=মাঃ হুমম এখন তো সব আমার দোষ তাই না।আমি সেই কখন থেকে ডাকছি তোর তো উঠার নামই নাই।
=আমিঃ ধূর তখন বলতে পারলে না যে এত দেরি হয়ে গেছে।
মাঃ তোকে বললে কি তুই শুনিস আমার কথা।
আমিঃ ধূর ভালো লাগে না।
এই কথা বলে তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হতে লাগলাম। কি ঘুম যে আমার হয়ছে বুঝিনা জীবনের প্রথম ইন্টারভিউ তাও লেট। এখন ভালোই ভালোই ৯ টার ভেতর অফিসে পৌছাতে পারলে হয়।তার পর তৈরি হয়ে বাসা থেকে বের হলাম,,,,,
আমিঃ মা আমি আসি।
=মাঃ আরে আরে না খেয়ে যাচ্ছিস কেন কিছু খেয়ে যা।
=আমিঃ না মা এখন আর কিছু খাওয়ার সময় নেই। এমনিতেই অনেক দেরি হয়ে গেছে।
=মাঃ তাই বলে না খেয়ে যাবি।
=আমিঃ হুমম পরে কিছু খেয়ে নিবো। তুমি শুধু দোয়া করো যেন চাকরিটা হয়ে যায়।
মাঃ পাগল ছেলে এই কথা কি বলতে হয় নাকি। আচ্ছা সাবধানে যাবি।
এই কথা বলে বাইক নিয়ে বাসা থেকে বের হলাম। ওহ-হো আপনাদের তো এখনও আমার পরিচয় টা দেওয়া হয়নি। কি করবো বলুন এমনিতে লেট তাই আর পরিচয় দিতে সময় হয়নি। আচ্ছা ছারুন এসব কথা এখন আপনাদের সাথে পরিচয় পর্বটা শেষ করে ফেলি। গল্পের প্রথমে তো সবাই আমার নাম জানলেনই তার পর বলছি আমি হলাম রাজ মা-বাবার এক মাত্র সন্তান। আজ পরিচয় এই পর্যন্তুকই থাক বাকিটা না হয় গল্পের মাধ্যমে জানতে পারবেন। আপনাদের সাথে কথা বলতে বলতে অফিসে চলে আসছি। কোন রকম বাইকটা পার্ক করে। এক দৌড় দিয়ে লিফট এর কাছে যেতেই কারো সাথে ধাক্কা খেয়ে পরে গেলাম।
তারপর উঠে দেখি একটা মেয়ে আমার দিকে রাগি ভাবে তাকিয়ে আছে। মেয়েটা কে প্রথম দেখাতেই যেন ক্রাশ খেলাম। আসলে মেয়েটার মুখটা এতটাই মায়াবী লাগছিল যে মনে হচ্ছে সারাজীবন এভাবে তাকিয়ে কাটিয়ে দিতে পারবো।
মেয়েটাঃ এই যে হ্যালো।(আমার মুখের সামনে হাতের আঙুলে তুড়ি মেরে)
=আমিঃ,,,,,,,,,,,,।(চুপ করে তার দিকে চেয়ে আছি)
=মেয়েটাঃ কি হলো কানে শোনেন না নাকি।(আমার গায়ে হাত দিয়ে নাড়া দিলো)
=আমিঃ হুমম বলুন।
=মেয়েটাঃ কপালে চোখ নেই দেখা হাটতে পারেন না।
=আমিঃ এই একই কথা তো আমিও আপনাকে বলতে পারি।
=মেয়েটাঃ কি বললেন আপনি।(রাগী ভাবে)
=আমিঃ দেখুন আপনার সাথে ঝগড়া করার মত সময় আমার কাছে নেই এমনিতেই অনেক দেরি হয়ে গেছে।
=মেয়েটাঃ কিহ্ আমি আপনার সাথে ঝগড়া করছি।(রাগী ভাবে)
=আমিঃতা নয়তো কি। আপনাকে দেখতে তো খুব মিষ্টি কিন্তু আপনার কথায় তো কোন রস কস নাই।
=মেয়েটাঃ আপনি কিন্তু এবার আপনার লিমিট ক্রশ করে ফেলছেন।
=আমিঃ হাহাহা। এই জন্যেই তো আমি সব সময় আনলিমিটেড নিয়ে চলি।( হাসতে হাসতে)
=মেয়েটাঃ উফফ!! আপনার সাথে কেন যে কথা বলতে গেলাম। শুধু শুধু আমার সময় নষ্ট।
=আমিঃ সময় আর আপনার কথায় নষ্ট হলো।যা নষ্ট হওয়ার হলো তো আমার।
মেয়েটাঃ মানে।
আমিঃ মানে এমনিতেই আমার ইন্টারভিউ দিতে দেরি করে আসছি।
=মেয়েটাঃ আপনি তো দেখছি খুব বেয়াদব। নিজে দোষ করে আমাকে দোষারপ করছেন।
=আমিঃ আমার মাও না ঠীক এই কথা বলে।(মুচকি হাসি দিয়ে)
আমাদের কথার মাঝে লিফট চলে আসলো।আমি যেই লিফটে উঠতে যাবো তখনই মেয়েটা আমাকে বলে,,,,,,,,
=মেয়েটাঃ ঐ খবরদার একদম আমার সাথে আসার চেষ্টা করবেন না।
=আমিঃ কেন অফিসটা কি আপনার বাবার নাকি যে আপনি লিফটে উঠতে বারং করবেন আর আমি ও আপনার কথা শুনবো।
=মেয়েটাঃ হ্যা আমার বাবারই।
=আমিঃ হাহাহা। আপনি বলবেন আর আমি মেনে নেবো।(হেসে হেসে)
মেয়েটার দিকে তাকিয়ে দেখি রাগেতে মুখটা একদম রক্ত বর্ণ ধারণ করেছে।চোখ ২ টো দেখে মনে হচ্ছে আগুন জ্বলজ্বল করছে। এর মাঝে একটা লোক এসে মেয়েটা কে বলে,,,,,,,,,,
লোকটাঃ Good Morning Mam.
মেয়েটাঃ হুমম Good Morning.
তাদের ২জনের কথা শুনে তো আমি অবাক হয়ে মেয়েটার দিকে তাকিয়ে আছি। মেয়েটা এবার আমার দিকে তাকিয়ে একটা মুচকি হাসি দিয়ে লিফট দিয়ে চলে গেলো।আর আমি বোকার মত দারিয়ে আছি।
আমিঃ আচ্ছা ভাই যেই মেয়েটা গেলো উনি কে।
লোকটাঃ নতুন নাকি।
আমিঃ হ্যা আজই ইন্টারভিউ দিতে এসেছি।
=লোকটাঃ ওও আচ্ছা। উনি হচ্ছেন নুসরাত ম্যাডাম এই অফিসের বস।
=আমিঃ হায় হায় রাজ তুই এটা কি করলি। ঝগড়া করার মত আর লোক পেলিনা শেষ মেষ অফিসের বসের সাথে।(মনে মনে)
লোকটাঃ ও ভাই কি ভাবছেন।
=আমিঃ নাহ্ তেমন কিছুনা।ভাবছিলাম ম্যাডাম মনে হয় খুবই শান্ত তাইনা।
=লোকটাঃ উনাকে শান্ত ভাবলে ভুল করবেন।উনি যেই রাগী একজন মানুষ তা উনাকে দেখে কেউ বলতে পারবে না যে উনি এমন রাগী।
আমিঃ নাহ্ তাহলে মনে হয়না আমার চাকরি টা আর হবে।(মনে মনে)
তারপর আমি ইন্টারভিউ এর জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। মনে হয়না ম্যাডামের সাথে এত কিছু হওয়ার পর চাকরিটা হবে। বসে বসে এসব কথা ভাবছি এমন সময় ইন্টারভিউ এর জন্য আমাকে ডাকা হলো।খুব টেনশন হচ্ছে। না জানি ভেতর গেলে কি হয়। ধুর যা হবার হবে আগে তো ভেতরে যাই।এই কথা বলে দরজাটা খুলে বলি,,,,,,,,
আমিঃ ম্যাডাম আসতে পারি।
=নুসরাতঃ হুমম আসুন।
কথাটা বলার পর আমি ভেতরে গেলাম।
=নুসরাতঃ বসুন।
=আমিঃ ধন্যবাদ ম্যাডাম।
=নুসরাতঃ দেখি আপনার ফাইলটা।
=আমিঃ,,,,,,,,,,,,।(চুপ করে ফাইলটা তার দিকে এগিয়ে দিলাম)
তারপর উনি আমার হাত থেকে ফাইলটা নিয়ে দেখতে লাগলেন। ধুর বাবা এত কিছু দেখার কি আছে চাকরি যে আপনি আমাকে দেবেন না সেটা আমি খুব ভালো করেই বুঝতে পারছি।
নুসরাতঃ হুমম আপনার সার্টিফিকেট এর সাথে তো আপনার ব্যাবহারের কোন মিল পাচ্ছি না।
আমিঃ যা মনে মনে ভাবছিলাম তাই। খালি দেখতেই সুন্দর কিন্তু মনটা তো একদমই সুন্দর না। জানি চাকরি টা পাবো না।(মনে মনে)
=নুসরাতঃ এই আপনি মনে মনে কি ভাবছেন।
=আমিঃ কৈ কিছু বলি নাইতো।
=নুসরাতঃ হুমম আপনি এখন আসতে পারেন।(হেসে দিয়ে)
আমিঃ কিন্তু ম্যাডাম।(আমাকে বলতে না দিয়ে)
=নুসরাতঃ দরজাটা ঐদিকে।
আমি আর কিছু না বলে চুপ করে মাথা নিচু করে চলে যেতে লাগলাম। কি মেয়েরে বাবা একটু ও মায়া দয়া নাই। আরে দোষ কি শুধু আমার একার নাকি।
নুসরাতঃ এই যে শুনুন। কাল সকাল ৮ ভেতর অফিসে আসতে হবে বুঝলেন।
=আমিঃ,,,,,,,,,,,,।(চুপ করে তার দিকে চেয়ে আছি)
=নুসরাতঃ এমন হা করে তাকিয়ে না থেকে কাল থেকে কাজে মন দিবেন বুঝলেন।
=আমিঃ তার মানে চাকরি টা আমার।
=নুসরাতঃ হুমম যদিও আপনাকে দিতাম না। কিন্তু পরে ভেবে দেখলাম চাকরি টা আপনাকে দেওয়া যায়।
আমিঃ ধন্যবাদ ম্যাডাম।
=নুসরাতঃ হুমম এখন জান আর হ্যা কাল যেনো আসতে আবার লেট না হয়।
=আমিঃ না না কাল আপনি আমাকে সঠীক সময়ে দেখতে পারবেন।
এই কথা বলে আমিও বাসায় চলে আসি।বাসায় আসার পর,,,,,,,,,
বন্ধুরা আপনাদের সাপোর্ট বেশি পেলে ২য় পর্ব লিখা শুরু করব। আর যদি সাপোর্ট না পাই তাহলে গল্প লিখা এখানেই শেষ।
To be Continue ⏩
(চলবে……….)
Writer by স্বপ্নহীন_বালক
বন্ধুরা হয়তো অন্য সবার মত গল্পের কথা গুলো গুছিয়ে লিখতে পারিনা। তার-পর লিখার চিষ্টা করি। তাই গল্পটাই Next না লিখে ভালো বা খারাপ যেটাই আপনাদের কাছে মনে হয় সেটা জানাবেন। ধন্যবাদ।
( পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষা করুন।)