ম্যাডাম যখন বউ সকল পর্ব
#গল্পঃম্যাডামযখনবউ
#পর্বঃ০৬
=আমিঃ কিহ্ তুমি আর আমার বিয়ের জন্য মেয়ে পেলেনা শেষ মেষ অফিসের ম্যাডামের সাথে।
=মাঃ তাতে কি হয়ছে হ্যা।
=আমিঃ না না আমি এ বিয়ে করছিনা। তো করছিনা।
এই কথা বলে আমি আমার রুমে আলে গেলাম। কি কপাল আমার শেষমেশ কি এই মেয়ে আমার কপালে ছিলো। হে আল্লাহ তুমি ঐ মেয়ের জীবন সঙ্গি হিসেবে আমাকেই দেখলে নাকি। নাহ্ আমাকে যেভাবে হোক বাসা থেকে পালাতে হবে। তা নয় মা-বাবা আমাকে এবার বিয়ে দিয়েই ছাড়বে। এসব কথা ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে গেছি। সকালে ঘুম থেকে যেই দরজা খুলতে যাবো ঠীক তখনই দেখি,,,,,,,(৫ম পর্বের পর থেকে)
দরজাটা বাইরে থেকে লাগানো। কি ব্যাপার দরজাটা আবার সকাল সকাল কে লাগালো। নাহ্ সকাল সকাল এউ সব করে কে,,,,,,
=আমিঃ মা ও মা আরে বাড়িতে কি কেউ নাই নাকি। ( চিৎকার করে)
=মাঃ কিরে সকাল সকাল এমন ষাড়ের মত চেচাচ্ছিস কেন।
=আমিঃ কেন তুমি বুঝতে পারছোনা আমার দরজা খুলছে না কেন।
=মাঃ দরজা আমি বাইরে থেকে তালা দিয়ে দিছি।
=আমিঃ তালা দিয়ে দেছো মানে।কিন্তু কেন।(অবাক হয়ে)
=মাঃ শোন বাবা আমি তো তোর মা। তুই যদি এই বিয়ে করার ভয়ে বাসা থেকে পালিয়ে না যাস। তাই এই তালা দেওয়ার কারণ।
=আমিঃ মা বিয়ের তো এখনও অনেক দেরি। তাই বলে কি আমাকে এত দিন রুমের ভেতর বন্দী হয় থাকতপ হবে।
=মাঃ বিয়ের দেরি আর নেই আজ বিকালেই তোর বিয়ে।
=আমিঃ কিহ্। আজই বিয়ে মানে।(অবাক হয়ে)
=মাঃ হ্যা আজই তোর বিয়ে। নুসরাতের বাবার সাথে কথা বলে সব ঠীক করে ফেলছি।
=আমিঃ ওমা মা তুমিনা আমার সোনা মা।মা শুনো না। আমার একটা কথা রাখবে।
=মাঃ কি কথা বলে ফেল অনেক কাজ পড়ে আছে।এক মাত্র ছেলের বিয়ে বলে কথা।
=আমিঃ মা তুমি ঐ মেয়ের সাথে বিয়ে না দিয়ে অন্য যার সাথে দেবে আমি করবো। কিন্তু এই মেয়েকে বিয়ে করবোনা।
=মাঃ কেন এই মেয়ের কি সমস্যা।
=আমিঃ এমনিতে তো কোন সমস্যা নাই।তবে যেই রাগি দেখে মনে হয় মেয়ে না ছেলে।
=মাঃ এক বাপের এক মেয়ে হলে ও একটু রাগী হয়।এটা কোন সমস্যা না।
=আমিঃ মা তুমি আমার কথাটা তো একবার ভাবো।
=মাঃ তোর আর কোন কথা শুনতে পারবোনা। এমনিতে বেশি সময় নেই।
এই কথা বলে মা চলে গেলেন। ধুর ভালো লাগেনা। রাতে ঘুমানোর আগে কি কি ভাবছিলাম আর সকালে ঘটলো তার উল্টো। এখন বুঝতে পারছি কেন আংকেল সেদিন বাবার ফোন নাম্বার নিয়েছিলো। নাম্বার দেওয়ার আগে কেন এই সামান্য কথাটা মাথায় আসলো না। এত বড়লোক মানুষ আমার মধ্যে কি এমন দেখলো যে একে বারে নিজের মেয়ের সাথে বিয়ে দিয়ে দিচ্ছে। কেন যে সেদিন ওনাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলাম।
আচ্ছা একটা কথা কিছুতেই বুঝতে পারছি না যে ম্যাডাম কিভাবে এই বিয়ের জন্য রাজি হলো। আমার তো মনে হয় তার সাথেও এমন কিছু হয়ছে। দেখতে দেখতে দুপুর গড়িয়ে বিকাল হয়ে গেলো। এমন শুয়ে আছি এমন সময় দরজা খুলার শব্দ শুনতে পেলাম। তাকিয়ে দেখি মা-বাবা এক সাথে আমার রুমে প্রবেশ করলো। তারপর আমর হাতে একটা পাঞ্জাবি দিয়ে বলে,,,,,,,,,
=বাবাঃ নে তাড়াতাড়ি করে এটা পড়েনে।
=আমিঃ বাবা তুমিও।
=বাবাঃ তুই তো জানিস তোর মায়ের কথার উপরে আমি কথা বলিনা। তারপর আবার তোর মা তো এবার কোন খারাপ কাজ করছেনা যে আমি কিছু বলবো।
=আমিঃ বাবা আমি এই বিয়ে করতে পারবো না।
=বাবাঃ এ কথা বলে কোন লাভ হবেনা। তাই বেশি কথা না বলে তাড়াতাড়ি তৈরি হয়েনে। বাইরে সবাই তোর জন্য অপেক্ষা করছে।
তারপর আর কি করার কোন উপায় না পেয়ে তৈরি হয়ে নিলাম। দূর তৈরি হয়ছি তাতে কি হয়ছে। একবার বাসা থেকে বের হয় তারপর সুযোগ বুঝে পালিয়ে যাবে। নুসরাতের বাড়ি যাওয়ার জন্য সবাই তৈরি। আমিও বর সেজে বাইরে আসলাম। নিজেকে আজ সবচেয়ে বড় অসহায় মনে হচ্ছে। মা কে দেখেতো মনে হচ্ছে আমার থেকে বেশি খুশি। নিরবে গাড়ির ভেতরে গিয়ে বসলাম। রাস্তায় সুযোগ বুঝে নেমে যাবো। এই সব ভাবতেই মনের ভেতর একটু আনন্দে ভরে উঠলো। কিন্তু একি বাবা আমার পাশে বসছে কেন।হায় হায় মাও দেখি বসলো। মা এসে তার শাড়ির আচলের সাথে আমার এক হাত বেধে দিলো,,,,,,,,
=আমিঃ মা এটা কি করছো।
=মাঃ যেটা করছি ঠীকই করছি।
=আমিঃ আরে আমি কি এই চলতি গাড়ি থেকে ফাল দেবো নাকি।যে হাত বেদে দিলে।
=মাঃ ফাল দিতেও তো পারিস তোকে বিশ্বাস নাই।
নাহ্ মাও যে কি বুঝিনা।কি করে আমার মনের কথা বুঝে যায় বুঝিনা। মনপ হচ্ছে বিয়েটা মনে হয় করতেই হবে। তারপর আর কি করার বিয়ে বাড়ি এসে বসে আছি। সবাই আমাকে এমন ভাবে দেখছে মনে হয় আমি কোন এলিয়েন। এসব কান্ড দেখার পর ভিশন কান্না আসছে।কিন্তু কাঁদতে ও পারছি না। বসে আছি একটু পর ম্যাডাম মানে নুসরাত কে আমার পাশে এসে বসানো হলো। বাহ্ ম্যাডামকে তো দেখতে আজ খুব সুন্দর লাগছে। লাল শাড়িতে যেন তাকে আরো বেশি সুন্দর লাগছে। তারপর আর কি দেখতে দেখতে বিয়েটা হয়েই গেলো।
ম্যাডাম কে নিয়ে আমাদের বাড়ি চলে আসলাম। গাড়ির মধ্যে ম্যাডাম আর আমি পাশাপাশি বসে ছিলাম কিন্তু কেউ কারো সাথে কোন কথা বলিনি। ধুর আমিও যে শুধু ম্যাডাম ম্যাডাম বলে যাচ্ছি। এখন তো সে আমার বিয়ে করা বউ। নাম ধরেই বলতেই পারি। বাসার ছাদে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আজকের সারাদিনে আমার সাথে কি ঘটলো সেই সব কথা গুলো ভাবতে লাগলাম। কি অদ্ভুত গতকাল রাত পর্যন্তুক ছিলাম অবিবাহিত আর আজ রাতে হয়ে গেলাম বিবাহিত। এসব কথা ভাবছি এমন সময় পেছনে কারো পায়ের শব্দ শুনে পেছন ফিরে তাকালাম। তাকিয়ে দেখি বাবা আমার পেছনে দাঁড়িয়ে আছে,,,,,,,,
=বাবাঃ কিরে তুই এখনও এখানে দাঁড়িয়ে আছিস কেন।
=আমিঃ না বাবা এমনি দাঁড়িয়ে আছি।
বাবাঃআমি জানি তুই কি ভাবছিস।এসব কথা না ভেবে রুমে যা বউমা সেই কখন থেকে একা রুমে বসে আছে।
তারপর বাবার সাথে কথা বলে আমি আমার রুমে চলে আসলাম। রুমে এসে দেখি নুসরাত খাটের মাঝ খানে বড় একটা গোমটা দিয়ে বসে আছে।আমি দরজা আটকে দিয়ে আস্তে আস্তে বিছানার কাছে যেতে লাগলাম। আমি যতই নুসরাতের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি ততোই আমার হাত পা বুক সব এক সাথপ কাপতে লাগলে। অনেক কষ্টে নুসরাতের কাছে এসে যেই বসতে যাবো ঠীক তখনই নুসরাত আমাকে বলে,,,,,,,,,
=নুসরাতঃ ঐ খবরদার আপনি একদম আমার কাছে আসার চেষ্টা করবেন না।
নুসরাতের মুখে এমন কথা শুনতে আমি মোটে প্রস্তুত ছিলাম না।আমি এক ফাল দিয়ে বিছানা থেকে উঠে দূরে সরে গেলাম,,,
=আমিঃ কিন্তু কেন।
=নুসরাতঃ আমি আপনাকে স্বামী হিসাবে মানি না।
=আমিঃ তাহলে বিয়ে করলেন কেন।
=নুসরাতঃ আমি কি আপনাকে সাধে বিয়ে করছি নাকি। এমনিতে বাবার কথার কখনো অবদ্ধ হয়নি। তারপর বাবা যখন আপনার সাথে বিয়ের কথা বললেন তখন না বলছিলাম কিন্তু এটা শোনার পর বাবা অসুস্থ হয়ে পড়ে।
=আমিঃ তারপর কি হলো।
=নুসরাতঃ তারপর ডাক্তার এসে বাবাকে চেক-আপ করে বলে তাকে যেন কোন প্রকার টেনশনে না রাখি। তাই আমি বাদ্য হয়ে আপনাকে বিয়ে করছি।
=আমিঃ,,,,,,,,,। (চুপ)
=নুসরাতঃ বাবা যদি অসুস্থ না হতেন তাহলে আপনার মত ছেলেকে কখনোই বিয়ে করতাম না।
=আমিঃ ও হ্যালো ম্যাডাম। আমার ও আপনাকে বিয়ে করার কোন ইচ্ছা ছিলোনা বুঝলেন।
=নুসরাতঃ ইচ্ছা যখন ছিলোনা তাহলে বিয়ে করছেন কেন।
=আমিঃ বিয়ে করিনি আমাকে জর করে করানো হয়ছে।
=নুসরাতঃ জর করে করানো হয়ছে মানে।
=আমিঃ মানে খুব সোজা আপনি যেমন আপনার বাবার কথা ভেবে বিয়েতপ রাজি হয়ছেন তেমনি আমাকে আমার মা জর করে বিয়ে দিছে।
=নুসরাতঃ,,,,,,,,,,,,। (চুপ)
=আমিঃ আমার তো ইচ্ছে ছিলো প্রেম করে বিয়ে করার কিন্তু আপনার বাবার জন্য আমার সব স্বপ্ন মাটি হয়ে গেলো।
=নুসরাতঃ ঐ আপনি একদম আমার বাবাকে দোষ দিবেন না।
=আমিঃ দোষ দিবো না তো কি করবো। সে যদি আমার মাকে এই বিয়ের জন্য রাজি না করাতো তাহলে কোন দিনও আপনার মত একজন মেয়ের সাথে আমাড বিয়ে হতোনা।
=নুসরাতঃ ঐ আমার মত মেয়ে মানে।
=আমিঃ হুমম আপনি তো মেয়েনা। শুধু দেখতেই মেয়ের মত আর কথা বার্তাই তো ছেলেদের ও হার মানাবেন।
=নুসরাতঃ ঐ আপনার সাহস তো কম না আপনি আমাকে এসব বলছেন।
=আমিঃ যা সত্যি তাই বলছি।
বিঃদ্রঃ বন্ধুরা পরীক্ষা শুরু হয়ে গেছে তাই গল্প দিতে একটু দেরি হতে পারে। তাই দয়া করে কেউ কিছু মনে করবেন না। আর আমার জন্য দোয়া করবেন যেন পরীক্ষাটা ভালো হয়।
To be Continue ⏩
(চলবে……….)
Writer by স্বপ্নহীন_বালক
বন্ধুরা হয়তো অন্য সবার মত গল্পের কথা গুলো গুছিয়ে লিখতে পারিনা। তার-পর লিখার চিষ্টা করি। তাই গল্পটাই Next না লিখে ভালো বা খারাপ যেটাই আপনাদের কাছে মনে হয় সেটা জানাবেন। ধন্যবাদ।
( পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষা করুন।)