ম্যাডাম যখন বউ সকল পর্ব
#গল্পঃম্যাডামযখনবউ
#পর্বঃ০৭
=নুসরাতঃ ঐ আপনি একদম আমার বাবাকে দোষ দিবেন না।
=আমিঃ দোষ দিবো না তো কি করবো। সে যদি আমার মাকে এই বিয়ের জন্য রাজি না করাতো তাহলে কোন দিনও আপনার মত একজন মেয়ের সাথে আমাড বিয়ে হতোনা।
=নুসরাতঃ ঐ আমার মত মেয়ে মানে।
=আমিঃ হুমম আপনি তো মেয়েনা। শুধু দেখতেই মেয়ের মত আর কথা বার্তাই তো ছেলেদের ও হার মানাবেন।
=নুসরাতঃ ঐ আপনার সাহস তো কম না আপনি আমাকে এসব বলছেন।
=আমিঃ যা সত্যি তাই বলছি।(৬ষ্ঠ পর্বের পর থেকে)
=নুসরাতঃ কি সত্যি বলছেন হ্যা। এটা ভুলে যাবেন না আমি আপনার অফিসের বস।
=আমিঃ হাহাহাহাহা।
=নুসরাতঃ আশ্চর্য আপনি এমন পাগলের মত হাসছেন কেন।
=আমিঃ ম্যাডাম আপনি মনে হয় ভুলে যাচ্ছেন এটা আপনার অফিস নয়। আর আপনিও এখন আমার বস না বুঝলেন।
=নুসরাতঃ ধুর আপনার সাথে কথায় বলতে চায়না।
=আমিঃ আমার ও কোন ইচ্ছা নাই আপনার সাথে কথা বলার। সরুন দেখি।
=নুসরাতঃ কথা সরবো।আর আপনি এদিকে কথায় আসছেন।
=আমিঃ বারে রাত তো কম হলোনা আমার ঘুম আসছে।
=নুসরাতঃ ঘুম আসছে বুঝলাম। কিন্তু আপনি খাটে আসছেন কেন।
=আমিঃ বারে বিছানায় শুতে হবেনা।
=ননুসরাতঃ না আপনি বিছানাতে ঘুমাতে পারবেন না।
=আমিঃ তাহলে কথায় ঘুমাবো।
=নুসরাতঃ আপনি নিচে ঘুমান।
=আমিঃ কিহ্।নিচে ঘুমাবো মানে।
=নুসরাতঃ মানে আমি আপনার সাথে এক বিছানায় শুতে পারবোনা।
=আমিঃ আপনার ঘুমানোর দরকার হলে ঘুমান। না হলে নাই।আমি তো বাবা নিচে ঘুমাতে পারবোনা।
=নুসরাতঃ দেখুন আমি আপনাকে স্বামী হিসাবে মানিনা তাই এক সাথে ঘুমানোর তো কোন প্রশ্নই আসেনা।
=আমিঃ তাহলে শুনে রাখুন এটা আমার রুম আমার রুমে আমি নিচে ঘুমাতে পারবোনা।
=নুসরাতঃ নিচে ঘুমাতে না পারেন তাহলে সোফায় গিয়ে ঘুমান।
=আমিঃ ধূর কি ঝামেলা। (বালিশ নিতে যাচ্ছি)
=নুসরাতঃ এই আপনাকে এত করে বলার পরও কেন বিছানা আসছেন।
=আমিঃ ম্যাডাম দয়া করে বালিশ টা তো নিতে দিন।
=নুসরাতঃ ঠীক আছে নিন।
এই কথা বলে বালিশ আর একটা কাঁথা নিয়ে সোফাতে গিয়ে শুয়ে পড়লাম। এমনিতে অনেক রাত হয়ছে আর কোন কথা বারিয়ে লাব নাই। নাহ্ মা-বাবা ও বিয়ে দেওয়ার জন্য মেয়ে পেলোনা। সালার কপালটাই খারাপ। তা না হলে এর সাথে বিয়ে হয় কি করে। এখন দেখছি আমার জীবন টাকে ত্যাজপাতা বানিয়ে ফেলবে। ধূর ভাল্লাগে না। এই কথা গুলো ভাবতে ভাবতে লাইটটা বন্ধ করে দিলাম,,,
=নুসরাতঃ আআআআআআ।(জরে চিৎকার করে উঠলো)
=আমিঃ কি হলো আপনার। এমন চিৎকার করলেন কেন।( লাইট জালিয়ে)
=নুসরাতঃ আপনি লাইট কেন বন্ধ করছেন।
=আমিঃ লাইটের আলোয় আমার ঘুম আসেনা।
=নুসরাতঃ না আপনি লাইট বন্ধ করবেন না।
=আমিঃ কেন।
=নুসরাতঃ আপনাকে আমার বিশ্বাস নেই যদি অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে আমার সাথে কিছু করে বসেন।
=আমিঃ ছিঃছিঃ। এমন বাজে চিন্তা ভাবনা আপনার মাথায় আসলো কি করে। আপনি আমাকে এতটা খারাপ মনে করেন।
=নুসরাতঃ খারাপ মনে না করার কি আছে।তাছাড়া ছেলেদের কে আমার বিশ্বাস হয়না।
=আমিঃ এটা জানিনা যে কেন আপনার ছেলেদের প্রতি এত অবিশ্বাস। তবে একটা কথা বলে রাখি। এখন আপনি আমার স্ত্রী তাই স্বামীর অধিকারে আপনার শরীরে হাত দেওয়ার অধিকার আমার আছে। কিন্তু আমি তা করবোনা কারণ যতদিন আপনি আমাকে মন থেকে স্বামীর অধিকার না দেবেন কথা দিচ্ছি আপনার প্রতি স্বামীর কোন অধিকার চাইবোনা।
=নুসরাতঃ,,,,,,,,,।(চুপ)
=আমিঃ এইতো লাইট জ্বালিয়ে রাখলাম। এখন আপনি নিশ্চিন্দে ঘুমাতে পারেন।
এই কথা বলে আমিও কাঁথা মুড়ি দিয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করলাম। ধুর বাসর রাত নিয়ে কত স্বপ্ন ছিলো কিন্তু আমার কপালে বাসর রাতে জুটলো সোফাতে ঘুমানোর ব্যবস্তা। এসব কথা ভাবতে ভাবতে কখন ঘুমিয়ে গেছি টের পাইনি । সকালে ঘুমিয়ে আছি এমন সময় মুখে পানির ফোটা এসে পড়লো ঘুম ঘুম চোখে চোখ দুটি খুলে দেখি নুসরাত তার চুলের পানি মুছতেছে। আর সেই পানির ফোটা আমার মুখে এসে পড়ছে। জানালা দিয়ে সকালের মিস্টি রোধের আলো নুসরাতের মুখে পড়াতে নুসরাত কে দেখতে যেন আরো সুন্দর লাগছে। আমি এক মনে নুসরাতের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি।
=নুসরাতঃ এই যে মি. এভাবে হা করে তাকিয়ে কি দেখেন।(মুখের সামনে আঙুল তুড়ি মেরে)
=আমিঃ তোমাকে।(আনমনে)
=নুসরাতঃ কিহ্ বললেন।(রাগী ভাবে)
=আমিঃ নাহ্ কিছু দেখি নাতো।
=নুসরাতঃ তাহলে ওমন হা করে আমার দিকে তাকিয়ে ছিলেন কেন।
=আমিঃ কথায় আপনার দিকে তাকিয়ে ছিলাম। আমি মোটেও আপনার দিকে তাকিয়ে ছিলাম না।
=নুসরাতঃ তাই নাকি।আপনি তাহলে আমার দিকে তাকিয়ে ছিলেন না।
=আমিঃ হ্যা।
=নুসরাতঃ তার মানে আপনি ট্যারা। ঐ আমার দিকে তাকানতো একটু।
=আমিঃ ধুর আমি ট্যারা হতে যাবো কোন দুঃখ্যে। আপনিও না সকাল বেলা কি শুরু করলেন।
এই কথা বলে ফ্রেশ হতে চলে গেলাম। যাক বাবা কোন রকম এ যাত্রাই বেঁচে গেছি তানা হলে তো ও ধরেই নিয়েছিলো যে আমি ওকে দেখছিলাম। এখন আর কোন কথা বলা যাবেনা সোজা নাস্তা করতে চলে যাবো। যেই ভাবা সেই কাজ আর কোন কথা না বলে সোজা নিচে চলে গেলাম নাস্তা করার জন্য। নুসরাত কে দেখলাম ব্যাগে কি যেন খুজছে।
=আমিঃ মা খেতে দাও।
=মাঃ সেকিরে তুই একা বউমা কথায়।
=আমিঃ ও রুমে আছে।
=মাঃ রুমে কি করছে কত বেলা হয়ে গেলো মেয়েটা এখনও কিছু খাইনি।
=আমিঃ মা এদিকে তোমার ছেলেও যে কিছু খাইনি সে খবর কি রাখো।
=মাঃ তোর খবর পরে নিচ্ছি আগে বল তুই কি বউমাকে ডাকিস নাই।
=আমিঃ নাহ্।
=মাঃ কি বললি যা আজ তোর খাওয়া বন্ধ।
=আমিঃ কিহ্। নিজের ছেলেকে না খাওয়ার রাখবে অন্য একটি মেয়ের জন্য।
=মাঃ ঐ শয়তান। ও অন্য মেয়ে হতে যাবে কেন। ও এখন এ বাড়ির বউ। তুই এখন থেকে পর বুঝলি।
=আমিঃ ওমা মা আজকের মত মাপ করে দাওনা মা।
=মাঃ নাহ্ কোন মাপ হবে না আগে বউমা আসুক তারপর সে যদি বলে মাপ করতে তাহলে আজকে খাবার পাবি তানা হলে খাওয়ার কথা ভুলে যা।
এই কথা বলে মা নুসরাত কে ডাকতে চলে গেলেন। আর এদিকে আমি ক্ষুধাই পেটের ভিতর ইদুর ক্রিকেট ম্যাচ খেলছে। মা ও কি বুঝিনা। আরে বাবা ওতো আমাকে স্বামী হিসাবে মানে না আর আমিও স্ত্রী হিসেবে মানতে পারবোনা। তাহলে শুধু শুধু কেন ওকে আগ বাড়িয়ে ডাকতে যাবো। এসব কথা মনে মনে ভাবছি এমন সময় মা আর নুসরাত কে আসতে দেখলাম।
নুসরাতের দিকে চোখ পড়তেই আমার চোখ আর সরাতে পারলাম কারণ নুসরাত কে এই প্রথম শাড়িতে দেখলাম। এর আগে অবশ্য কোন দিন শাড়ি তে দেখিনি। নাহ্ শাড়িতে ওকে অপরুপ লাগছে। যা লিখে প্রকাশ করা সম্ভব না। আচ্ছা আমি আবার নুসরাত কে ভালোবাসতে শুরু করিনি তো আবার। এই জন্য মনে হয় ওর দিকে তাকিয়ে থাকতে বেশি ভালো লাগে। না না তা কি করে হয় এই এক রাতে আবার কারো প্রেমে পড়া যায় নাকি। মনে হয় এটা আমার মনে ভুল ধারণা।
=মাঃ নাও মা বসো এখানে। আমি তোমার জন্য নাস্তা নিয়ে আসছি।
=নুসরাতঃ আমিও আপনার সাথে আসবো আপনার কাজে সাহায্য করতে।
=আমিঃ এএএএএ।অফিসের কাজই করতে পারেনা। আবার রান্নাঘরে গিয়ে মাকে সাহায্য করার কথা বলছে।(মনে মনে)
=মাঃ না মা তুমি নতুন বউ। আর নতুন বউকে প্রথম দিনে কোন কাজ করতে হয়না। তুমি বসো আমি তোমাদের খাবার নিয়ে আসছি।
=বাবাঃ আচ্ছা যখন মেয়েটা যেতে চাচ্ছে নিয়ে যাওনা সাথে করে।
=মাঃ আচ্ছা চলো।
এই কথাটা শুনার সাথে সাথে নুসরাতের মুখে যেন হাসি ফুটে উঠলো। নাহ্ এই মেয়ে টা যতই দেখি ততই অবাক হয়। বড় লোক ঘরের মেয়ে হয়েও রান্না ঘরে যেতে চায়।
=বাবাঃ কিরে হতোচ ছাড়া তুউ আবার মনে মনে কি ভাবছিস।
=আমিঃ নাহ্ কিছুনা।
একটু পর মা আর নুসরাত মিলে নাস্তা নিয়ে হাজির হলো। তারপর তারা দু’জন ও বসলো। এর পর সবার প্লেটে নাস্তা দিচ্ছে কিন্তু আমাকে দিনাই।
=আমিঃ একি আমার নাস্তা কথায়।
=মাঃ বললাম না তোর আজ খাওয়া বন্ধ।
=বাবাঃ সেকি কেন। কি করছে ও।
=মাঃ আর বলোনা শয়তান টা বউমাকে না নিয়ে একাই নাস্তা করতে চলে আসছে।
=বাবাঃ তাহলে ঠীক আছে। দরকার নেই ওকে খেতে দেওয়ার।
=আমিঃ বাবা তুমিও।
=নুসরাতঃ আজকের মত ওকে মাপ করে দিন।
=আমিঃ যাক যতই রাগী হক না কেন মনে একটু হলেও মায়া আছে।(মনে মনে)
=মাঃ তুমিও বলছো বউমা।
=নুসরাতঃ হ্যা মা আজকের মত মাপ করে দিন।
=মাঃ নে প্লেটটা ধর বউমা বললো বলে আজকের মত মাপ করে দিলাম।
তার পর আর কি করার মাথা নিচু করে চুপচাপ নাস্তা করে আমি রুমে চলে আসলাম। রুমে এসে শুয়ে আছি। আসলে রাতে সোফাতে ভালো ঘুম হয়নি। এমন সময় নুসরাত রুমে আসলো। তারপর আমি নুসরাত কে বলি,,,,,,,,,,,,,,,
বিঃদ্রঃ বন্ধুরা পরীক্ষা শুরু হয়ে গেছে তাই গল্প দিতে একটু দেরি হতে পারে। তাই দয়া করে কেউ কিছু মনে করবেন না। আর আমার জন্য দোয়া করবেন যেন পরীক্ষাটা ভালো হয়।
To be Continue ⏩
(চলবে……….)
Writer by স্বপ্নহীন_বালক
বন্ধুরা হয়তো অন্য সবার মত গল্পের কথা গুলো গুছিয়ে লিখতে পারিনা। তার-পর লিখার চিষ্টা করি। তাই গল্পটাই Next না লিখে ভালো বা খারাপ যেটাই আপনাদের কাছে মনে হয় সেটা জানাবেন। ধন্যবাদ।
( পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষা করুন।)