ম্যাডাম যখন বউ সকল পর্ব
#গল্পঃম্যাডামযখনবউ
#পর্বঃ০৮
=আমিঃ যাক যতই রাগী হক না কেন মনে একটু হলেও মায়া আছে।(মনে মনে)
=মাঃ তুমিও বলছো বউমা।
=নুসরাতঃ হ্যা মা আজকের মত মাপ করে দিন।
=মাঃ নে প্লেটটা ধর বউমা বললো বলে আজকের মত মাপ করে দিলাম।
তার পর আর কি করার মাথা নিচু করে চুপচাপ নাস্তা করে আমি রুমে চলে আসলাম। রুমে এসে শুয়ে আছি। আসলে রাতে সোফাতে ভালো ঘুম হয়নি। এমন সময় নুসরাত রুমে আসলো। তারপর আমি নুসরাত কে বলি,,,,,(৭ম পর্বের পর থেকে)
=আমিঃ ধন্যবাদ।
=নুসরাতঃ কেন।(ভ্রু ভাচ করে)
=আমিঃ এই যে আমার মা বাবার সামনে ভালো ব্যবহার করার জন্য।
=নুসরাতঃ আপনার কি মনে হয় আমি মা-বাবার সামনে স্ত্রীর অভিনয় করছি।
=আমিঃ না নয়তো কি হ্যা। আপনি তো নিজেই বলছেন যে আপনি এই বিয়ে মানেন না। আর আমাকে স্বামী হিসাবে তো মানার প্রশ্নই আসেনা।
=নুসরাতঃ হুমম বলছি। কিন্তু সেটা শুধু আপনাকে। তাছাড়া মা-বাবার সাথে যেটা করছি সেটা আমার মন থেকে করছি কোন অভিনয় না।
=আমিঃ তাই নাকি। (অবাক হয়ে)
=নুসরাতঃ আর শুনুন এসবের সুযোগ নিয়ে আবার স্বামীর অধিকার দেখাতে আসবেন না।
কথাটা বলে চলে গেলো। কি মেয়েরে বাবা। নিজেই একা একা সব বলে।আমাকে বলার সুযোগ ও দেয় না। আমি আবার তার কাছে কখন স্বামীর অধিকার চাইলাম। ধুর মেয়েদের মন বুঝা বড় কষ্ট। আমার বাবা এসব ভেবে লাব নেই রাতে সোফাতে ভালো ভাবে ঘুমাতে পারি নাই। এখন একটু আরামে ঘুমায়। ঘুমিয়ে আছি এমন সময় মা এসে ডাক দেয়,,,,,,,,,,,,
=মাঃ কিরে এই অবেলায় ঘুমিয়ে আছিস কেন।
=আমিঃ আসলে রাতে সোফাতে ঘুমাইছি তো তাই ঘুম ভালো হয়নি।(অস্পষ্ট ভাবে)
=মাঃ কি বললি।
=আমিঃ না মানে চোখটা একটু লেগে গেছিলো আর কি।
=মাঃ তার আগে কি বললি।
=আমিঃ কৈ কিছুনা তো। আমি আবার কি বললাম।
=মাঃ হুমম ভালো। এখম যা উঠে ফ্রেশ হয়ে তৈরি হয়েনে।
=আমিঃ কেন মা আমরা কথাও যাচ্ছি নাকি।
=মাঃ হুমম যাচ্ছিস তবে তুই আর বউমা।
=আমিঃ কথায় যাওয়ার কথা বলছো।(অবাক হয়ে)
=মাঃ তোর শশুর বাড়ি।
=আমিঃ কেন ওখানে যেতে হবে।
=মাঃ এত কথা বলিস কেন যেটা বলছি সেটা কর।
=আমিঃ না আমি যাবো না। তুমি নুসরাত কে একা যেতে বলো।
=মাঃ শোনো পাগল ছেলের কথা। শশুর বাড়ি যদি নুসরাত একা যায় তাহলে লোকে কি ভাববে।
=আমিঃ যার যা ভাবার ভাবুক আমি যাচ্ছি না ব্যাস।
=মাঃ তুই যাবিনা তোর ঘারে যাবে। আর একটা কথা বললে কিন্তু।(রাগি ভাবে)
=আমিঃ না না যাবো। তোমাকে আর বলতে হবেনা।(ভয়ে ভয়ে)
=মাঃ হুমম তাড়াতাড়ি তৈরি হয়েনে।
এই কথা বলে মা চলে গেলেন। আমিও তৈরি হতে লাগলাম। কি ব্যাজাল এখন আবার নুসরাত কে নিয়ে তার বাপের বাড়ি যেতে হবে। মা ও যে কি বুঝিনা। বলি ও কি কচি খুকি নাকি যে একা যেতে পারবেনা যার কারণে আমাকে সাথে যেতে হবে। তারপর আমি তৈরি হয়ে বাইরে এসে দেখি নুসরাত একদম তৈরি হয়ে বসে আছে আমি যাওয়ার সাথে সাথে বসা থেকে উঠে দাড়িয়েছে। আহহা নিজের বাড়ি যাওয়ার জন্য একে বারে আগে আগে তৈরি হয়ে গেছে। নুসরাতের বাবা আমাদের নেওয়ার জন্য গাড়ি পাঠিয়েছে। মা-বাবার কাছ থেকে বিদায় নেওয়ার সময় নুসরাত মাকে ধরে কেঁদে দিলো। এটা দেখে মনে হচ্ছে বাপের বাড়ি না শশুর বাড়ি যাচ্ছে নিজের মা-বাবা কে ছেড়ে। এটা দেখে আমার ওর প্রতি কেমন জামি মায়া হলো।
=মাঃ দেখো পাগলি মেয়র কান্ড কাঁদছিস কেন এমন করে।
=নুসরাতঃ আমার মা সেই ছোট বেলায় মারা গেছে। মায়ের ভালোবাসা কখনও পাইনি।কিন্তু, এই একদিনে আপনার কাছে থেকে যেই আদর স্নেহ পাইছি। এতে করে আপনাকে ছেড়ে যেতে মন চাচ্ছে না মা।(কেঁদে কেঁদে)
=মাঃ কে বলেছে তোর মা নেই আমি কি তোর মা নয়।
=নুসরাতঃ,,,,,,,,,,।(চুপ করে কেঁদেই যাচ্ছে)
=বাবাঃ এবার কান্না থামিয়ে চোখের পানি মুছে ফেলোত দেখি।
তারপর নুসরাত চোখের পানি মুছে মা-বাবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে গাড়িতে বসলো। আমিও তার পাশে গিয়ে বসলাম। আমার তো সেই খুশি লাগছে যতোই হক শশুর মশাই এর পাঠানো গাড়িতে করে শশুর বাড়ি যাওয়ার মজাই আলাদা। সারা রাস্তায় নুসরাত আমার সাথে কোন কথা বলেনি।আমিও বলার চেষ্টা করিনি। অবশেষে আমরা নুসরাতের বাড়ি মানে আমার শশুর বাড়ি এসে পৌছালাম। আমাদের দেখে নুসরাতের বাবার মুখে হাসি ফুটে উঠলো।
=আংকেলঃ কেমন আছিস মা।
=নুসরাতঃ ভালো।তুমি কেমন আছো বাবা।
=আংকেলঃ মারে তোরে ছাড়া বাড়িটা পুরো ফাকা ফাকা লাগে ভালো থাকি কি করে বল।
=নুসরাতঃ তাহলে বিয়ে দিলে কেন।
=আংকেলঃ শোনো পাগলি মেয়ের কথা।
=আমিঃ আংকেল কেমন আছেন। (সালাম করতে করতে)
=আংকেলঃ আরে বাবা করো কি। সালাম করতে হবেনা। তুমি আমার বুকে আসবে।
এই কথা বলে আমাকে বুকে জরিয়ে নিলেন।
=আংকেলঃ যা মা জামাই কে রুমে নিয়ে যা। ফ্রেশ হয়েনে আমি তোদের খাবার দিতে বলছি। আজ সবাই এক সাথে খাবো।
=নুসরাতঃ আচ্ছা বাবা।
তারপর আমি নুসরাতের পেছন পেছন একটা রুমের ভেতর গেলাম। রুমের ভেতর গিয়ে আমার আর বুঝতে বাকি রইল না যে এটাই নুসরাতের রুম। তার পর আমি খাটে গিয়ে বসতেই নুসরাত বলে,,,,,,,
=নুসরাতঃ ও হ্যালো মি. এটা আমার রুম। তাই কোন কিছু এলোমেলো করবেন না।
=আমিঃ হুমম বিয়ের আগে তোমার রুম কিন্তু এখন তো আমাদের তাইনা।(আস্তে করে)
=নুসরাতঃ ঐ কি বললেন।(রাগি ভাবে তাকিয়ে)
=আমিঃ কিছুনা।
=নুসরাতঃ না আপনি কিছু একটা বলছেন বলুন কি বলছেন।
=আমিঃ বলছি কোন কিছুই এলোমেলো করবোনা।
=নুসরাতঃ সত্যি তো।
=আমিঃ কেন আপনার বিশ্বাস হচ্ছে না।
=নুসরাতঃ না আমার কেন জানি মনে হচ্ছে আপনি অন্য কিছু বলছেন।
=আমিঃ আপনার যেটা মনে করার করুন আমি গেলাম।
এই কথা বলে আমি ফ্রেশ হতে চলে গেলাম। ফ্রেশ হয়ে বাইরে আসতেই নুসরাত ফ্রেশ হতে গেলো আর আমি নিচে চলে গেলাম আংকেল এর কাছে,,,,,,,,,,,
=আংকেলঃ বাবা তুমি আসছো। বসো এখানে।
=আমিঃ আংকেল এখন আপনার শরীরের অবস্থা কেমন।
=আংকেলঃ এখন অনেকটা ভালো বাবা।
=আমিঃ হুমম ঔষধ গুলো নিয়মিত খাবেন।
আমাদের কথার মাঝে দেখি নুসরাত এসে গেছে। নুসরাত আজ নীল একটা শাড়ি পড়েছে। এতে করে তাকে একদম নীল পরির মতে লাগছে। যদিও আমি এখনও পরি দেখি নাই। আমিতো এক পলকে নুসরাতের দিকে চেয়ে আছি। কিছু তেই ওর থেকে চোখ সরাতে পারছিনা। আসলে শাড়ি পড়লে যে মেয়েদের কে এত সুন্দর লাগে তা মনে হয় নুসরাত কে না দেখলে বুঝতে পারতাম না।
=আংকেলঃ বাহ্ আমার মেয়েটাকে দেখছি শাড়িতে খুব সুন্দর লাগে। শাড়িতে তোকে একদম তোর মায়ের মত লাগছে।
=নুসরাতঃ বাবা তুমিও না। আবার মায়ের কথা মনে করে চোখের পানি ফেলছো।
=আংকেলঃ নারে মা একটু আনন্দে চোখ দিয়ে পানি বেরিয়ে গেলো আর কি। নে খেতে বস।
তার পর নুসরাত আমার সামনের চেয়ারে বসলো। আমি তখনও নুসরাতের দিকে এক পলকে চেয়ে আছি। নুসরাত আমার দিকে রাগি ভাবে তাকিয়ে ইশারা করে জিজ্ঞেস করলো আমি এমন হা করে কি দেখছি। ওর ঐ রাগী ভাবে তাকানো দেখে ভয়ে আমি আর ওর দিকে তাকালাম না।
=আংকেলঃ বাবা আমার মেয়ে কি তোমাকে এই একদিনে জ্বালিয়েছে খুব তাইনা।
=আমিঃ খালি জ্বালানো নাকি আংকেল। জানেন রাতে আমাকে সোফায় আআআআ।(সম্পূর্ণ কথা বলার আগে নুসরাত আমাকে ওর পা দিয়ে আমার পায়ে চিমটি কাটে তাই আমি চিৎকার করে উঠি।)
=আংকেলঃ আরে আরে কি হলো তোমার এভাবে চিৎকার করলে কেন।
=আমিঃ আসলে আংকেল মাছের কাটা গলায় আটকে গেছে।
=আংকেলঃ সেকি। নাও পানি খাও।
=আমিঃ না আংকেল এখন চলে গেছে।
=আংকেলঃ যাক ভালো। তা বাবা কি যেন বলতে গেলে।
=আমিঃ বলছিলাম কি আংকেল। আপনার মেয়ের মত এত ভালো মেয়ে হয়না। আসলে আমি সত্যি অনেক ভাগ্যবান যে এত ভালো একটা মেয়ে আমার বউ।
এই কথাটা বলেই আমি নুসরাতের দিকে তাকাতেই দেখি নুসরাত আমার দিকে চোখ বড় বড় করে রাগী ভাবে তাকিয়ে আছে। ওকে দেখে মনপ হচ্ছে এখনই আমাকে মেরে ফেলবো। আমিতো ভয় পেয়ে আর ওর দিকে না তাকিয়ে চুপ করে খেতে লাগলাম। আল্লাহ ই জানে একা পেলে আমাকে কি করে। তারপর আংকেল আমাকে বলে,,,,,,,,,
বিঃদ্রঃ বন্ধুরা পরীক্ষা শুরু হয়ে গেছে তাই গল্প দিতে একটু দেরি হতে পারে। তাই দয়া করে কেউ কিছু মনে করবেন না। আর আমার জন্য দোয়া করবেন যেন পরীক্ষাটা ভালো হয়।
To be Continue ⏩
(চলবে……….)
Writer by স্বপ্নহীন_বালক
বন্ধুরা হয়তো অন্য সবার মত গল্পের কথা গুলো গুছিয়ে লিখতে পারিনা। তার-পর লিখার চিষ্টা করি। তাই গল্পটাই Next না লিখে ভালো বা খারাপ যেটাই আপনাদের কাছে মনে হয় সেটা জানাবেন। ধন্যবাদ।
( পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষা করুন।)